পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ख्रिशूक 32oYe0 দুঃখ-দারিদ্র্যের শোচনীয় কাহিনী বলিয়া যায়। কপাল, সবই মানুষের কপাল । নয়ত একজন মানুষের জীবনে কখনও এত দুৰ্ভাগ্য ভিড় করিয়া আসিয়া হাজির হয়! এদিকে শহরে সে দুটি পয়সা উপার্জনের চেষ্টায় প্ৰাণপাত করে, আঁজলা ভরিয়া রাস্তার কলের জল খাইয়া ক্ষুধাতৃষ্ণা মেটায়, আর এদিকে আত্মীয়ের আশ্রয়ে বৌ ছেলেমেয়ে তার পেট ভরিয়া খাইতে পায় না, বিনা চিকিৎসায় মরিয়া যায়। অথচ একদিন তার কি না ছিল ! বাড়ি ছিল, জমিজমা ছিল, কত আত্মীয় পরিজনকে সে আশ্রয় দিয়াছে। বলিতে বলিতে গভীর বিষাদে যাদবের হৃদয় ভারাক্রান্ত হইয়া উঠে, গলা ভারী হইয়া আসে। মাঝে মাঝে সে ভুলিয়াই যায়, সে যা বলিতেছে কিছুই তার সত্য নয়, নিজের কাল্পনিক কাহিনীতে নিজেই অভিভূত হইয়া তার মনে হইতে থাকে, উঃ, কি কষ্টই সে পাইয়াছে জীবনে ? পথের শেষের দিকে সঙ্গী লোকটি একটু বেশী রকম চুপচাপ হইয়া যায়, কি যেন ভাবিতে থাকে। যাদবের শ্বশুরবাড়ির গ্রামের গা ঘোষিয়া পথটি সোদপুরের দিকে চলিয়া গিয়াছে, সেইখানে ছাড়াছাড়ি । বিদায় নিয়া যাদব গ্রামের দিকে পা বাড়াইয়াছে, লোকটি ডাকিয়া বলে, “একটু দাঁড়ান ত!’ কাছে আসিয়া যাদবের হাতে একটা কাগজ গুজিয়া দিয়া সে বলে, “আপনার ছেলের চিকিৎসা করবেন।”-বলিয়াই হনহন করিয়া আগাইয়া যায়। তারার আলোতেও যাদব বুঝিতে পারে, কাগজটা একটা দশ টাকার নোট। প্ৰথমে যেমন বিস্ময় জাগিয়াছিল, তেমনি হইয়াছিল আনন্দ । সকলকে শহরে নেওয়ার খরচটা ভগবান জুটাইয়া দিলেন। ঘরের পয়সা আর খরচ করিতে হইবে না। কথাটা যাদবের মনে নানাভাবে পাক খাইয়া বেড়াইতে থাকে । সে ত কোন সাহায্য চায় নাই, তবু ভদ্রলোক যাচিয়া তাকে একেবারে দশ দশটা টাকা দান করিয়া ফেলিলেন কেন ? বিশেষ বড়লোক বলিয়াও ত মনে হয় নাই মানুষটাকে ? তার বানানো দুঃখের কাহিনী শুনিয়া এমনভাবে মন গালিয়া গোল যে একেবারে দশটা টাকা তাকে না দিয়া সে থাকিতে পারিল না । সকলকে নিয়া যাদব শহরে ফিরিয়া যায়। আগেই যে খোলার ঘরটি ভাড়া করিয়া রাখিয়াছিল। সেখানে গিয়া ওঠে, নিয়মিত কাজ করিতে যায়। কাজ করিতে করিতে তার মনে হয়, টাকা রোজগার করা কি কষ্টকর ব্যাপার! কাজের উপর বিতৃষ্ণা তার ছিল চিরদিনই, এখন মনে হয়, খাটুনি যেন বড় বেশী বাড়িয়া গিয়াছে। মানুষ এত খাটিতে পারে ? এতকাল মাস গেলে বেতনের টাকাটা o -f6ts o SV