পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ኃö8 छिकूक হাতে পাইয়া সে বড় খুশী হইত, আজকাল ক্ষুন্ন হইয়া ভাবে, ত্রিশ একত্রিশ দিন প্রাণান্তকর পরিশ্রমের বিনিময়ে মোটে এই কািট টাকা! সহজে টাকা রোজগার করার কি কোন উপায় নাই, সেদিন রাত্রে কিছুক্ষণ শুধু বকবক করিয়া যেমন দশ দশটা টাকা রোজগার করিয়া ফেলিয়াছিল ? ভাবিতে ভাবিতে তার মনে হয়, দয়ালু লোক কি জগতে সেই একজনই ছিল, আর নাই শহরের এই লাখ লাখ লোকের মধ্যে ? মর্মস্পর্শী করিয়া দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী সে কি একেবারেই বলিতে পারিয়াছিল, আর পরিবে না ? জনহীন প্ৰান্তরের সেই বিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থাটি হয়ত জুটিবে না, পথ চলিতে চলিতে একজনকে অতক্ষণ ধরিয়া দুঃখের কাহিনী, শোনানো যাইবে না, একেবারে দশটাকা দান করিয়া বসার মত উদারতাও হয়ত কারও জাগিবে না, তবু যেমন অবস্থায় যতটুকু শোনানো যায় আর যতটুকু উদারতা জাগানোর ফলে যা পাওয়া যায় । কাজের শেষে একদিন বাড়ি ফেরার সময় সিন্ধের পাঞ্জাবি-পরা এক ভদ্ৰলোককে যাদব বলিয়া বসে, “দেখুন, আমি বন্ড বিপদে পড়েছি—” এক নজর চাহিয়াই সিন্ধের পাঞ্জাবি-পরা ভদ্রলোক সিগারেট টানিতে টানিতে জোরে হাটিয়া আগাইয়া যায়। রাগে দুঃখে অপমানে যাদবের গা’টি যেন জ্বালা করিতে থাকে। গভীর হতাশাতেও তার মনটা ভরিয়া যায়। একটু দাডাইয়। শুনিল না পর্যন্ত সে কি বিপদে পড়িযছে, মুখ বাকাইয়া গাঁটগট করিয়া চলিয়া গেল ! এই কি মানুষ, এই কি ভদ্রলোক ? আবার সিস্কের পাঞ্জাবি গায়ে দেওয়া হইয়াছে ! ক’দিন আর সহজ উপায়ে রোজগারের চেষ্টা করিয়া দেখিবার উৎসাহ যাদবের জাগে না, মুখ ভার করিয়া কাজ করে এবং খোলার বাড়িতে ফিরিয়া গিয়া বৌকে গালাগালি দেয়। আর ছেলেমেয়েগুলিকে ধরিয়া ধরিযা পিটায়। এদের আনিয়া খরচ বাড়িয়া গিয়াছে, মারাত্মক রকমের খরচ বাড়িয়া গিয়াছে। বেতনের টাকায় আর কুলায় না, জমা টাকা হইতে কিছু কিছু খরচ করিতে হয়। কি উপায় হইবে ভাবিতে গিয়া যাদবের মাথা গরম হইয়া উঠে। মাথা ঠাণ্ড করার জন্য বন্ধুর সঙ্গে একটা খোলার ঘরে একটু ফুর্তি করিতে গিয়া সারারাত আর বাড়িই C卒亿颈本{ 1 সকালে আর সময় থাকে না বাড়ি যাওয়ার, রাস্তার কলে মুখ-হাত ধুইয়া কোন • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৫০