পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক SS কিছু আসিয়া যাইত না। এসব অর্থের কাঙালি নিচু স্তরের মানুষ সম্বন্ধে ঘনিষ্ঠামের মনে গভীর অবজ্ঞা আছে। এদের একজন তাকে মিথ্যাবাদী প্ৰবঞ্চক বলিয়া জানিয়া রাখিয়াছে, ভাবিলে সে গভীর অস্বস্তি বোধ করে না, মনের শান্তি নষ্ট श्वां बांध न। ঘরের অপর প্রান্তে, মণিমালার বিছানার হােততিনেক তফাতে, নিজের বিছানায় গিয়া ঘনশ্যাম শুইয়া পড়িল । ভিজা ভিজা লাগিতেছে বিছানাটা । ছোট মেয়েটা সারারাত চরকির মত বিছানায় পাক খায়, কখন আসিয়া এদিকে তার বিছানা ভিজাইয়া ওপাশে খোকার ঘাড়ে পা তুলিয়া দিয়া অকাতরে ঘুমাইতেছে। মারিবে ? এখন মারিলে অন্যায় হয় না। সজোরে একটা চড় বসাইয়া দিবে ওর পিঠের ওই পাজরায় অথবা লোল ও তুলার আঁশ মাখানে, গালে ? আধঘণ্টা ধরিয়া চিৎকার করিবে মেয়েটা । মণিমালা ছাড়া কারো সাধ্য হইবে না। সহজে ওর সেই কান্না থামায়। আধঘণ্টা মরার মত পড়িয়া থাকিয়া ঘনশ্যাম উঠিয়া পড়িল । অশ্বিনীর কাছেই আবার সে কয়েকটা টাকা ধার চাহিবে, যা থাকে কপালে। এবার হয়ত রাগ করিবে অশ্বিনী, মুখ ফিরাইয়া বলিবে তার টাকা নাই। হয়ত দেখাই করিবে না। তবু অশ্বিনীর কাছেই তাকে হাত পাতিতে হইবে। আর কোন উপায়ই नशे । বহুকালের পুরনো পোকায় কাটা সিস্কের জামাটি দিনতিনেক আগে বাহিরু করা হইয়াছিল, গায়ে দিতে গিয়া ঘনশ্যাম থামিয়া গেল। আর জামা নাই বলিয়া সে যে এই জামাটি ব্যবহার করিতেছে, এই জামা গায়ে দিয়া বাজার পর্যন্ত করিতে যায়, অশ্বিনী তা টের পাইবে না। ভাবিবে, বড়লোক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করিতে যাইবে বলিয়া বাক্স প্যাটরা ঘাটিয়া মান্ধাতার আমলের পোকায় কাটা দাগ ধরা সিস্কের পাঞ্জাবিটি সে বাহির করিয়াছে। মনে মনে হয়ত হাসিবে অশ্বিনী । তার চেয়ে ছেড়া ময়লা শার্টটা পরিয়া যাওয়াই ভাল। শার্টের ছেড়াটুকু সেলাই করা হয় নাই দেখিয়া ঘনশ্যামের অপূর্ব সুখকর অনুভূতি জাগিল। কাল লতাকে সেলাই করিতে বলিয়াছিল। একবার নয়, দু’বার। সে ভুলিয়া গিয়াছে। ন্যায়সঙ্গত কারণে মেয়েটাকে মারা চলে। ও বড় হইয়াছে, কঁাদাকাটা করিবে না । কঁদিলেও নিঃশব্দে কঁদিবে, মুখ বুজিয়া। ‘লতা ইদিকে আয় । ইদিকে আয় হারামজাদী মেয়ে ” o *-fifòNS 9 OA