পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RSSR বিবেক চড় খাইয়া ঘনশ্যামের অনুমান মত নিঃশব্দে কঁাদিতে কঁাদিতে লতা শার্ট সেলাই ? করে, আর বিড়ি ধরাইয়া টানিতে টানিতে গভীর তৃপ্তির সঙ্গে ঘনশ্যাম আড়চোখে তার দিকে তাকায়। মায়া হয়, কিন্তু আপসোস হয় না। অন্যায় করিয়া মারিলে আপসোস ও অনুতাপের কারণ থাকিত । অশ্বিনীর মন্ত বাড়ির বাহারে গেট পার হওয়ার সময় সবিনয় নম্রতায় ঘনশ্যামের মন যেন গলিয়া যায়। দাসানুদাস, কীটানুকীটের চেয়ে নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়। সমস্তক্ষণ মৰ্মে মর্মে উপলব্ধি করে যে, ধনহীনতার মত পাপ আর নাই। রাস্তায় নামিয়া যাওয়ার পর বহুক্ষণ পর্যন্ত এই ভয়াবহ। অপরাধের ভারে সে যেন দু’এক ডিগ্ৰী সামনে বঁাকিয়া কুঁজে হইয়া থাকে। সবে তখন আটটা বাজিয়াছে। সদর বৈঠকখানার পর অশ্বিনীর নিজের বসিবার ঘর, মাঝখানের দরজার পুরু দুর্ভেন্ত পর্দা ফেলা থাকে। এত সকালেও বৈঠকখানায় তিনজন অচেনা ভদ্রলোক ধারনা দিয়া বসিয়া আছেন। ঘনশ্যাম দমিয়া গেল। একটু ইতস্ততঃ করিয়া সাহসে বুক বাধিয়া পর্দা ঠেলিয়া ঢুকিয়া পড়িল অশ্বিনীর বসিবার ঘরে। অন্দর হইতে অশ্বিনী প্ৰথমে এ ঘরে আসিবে। ঘরে ঢুকিয়াই ঘনশ্যাম সাধারণভাবে বুঝিতে পারিয়াছিল। ঘরে কেউ নাই। সোনার ঘডিটার দিকে চোখ পড়ার পর আরেকবার বিশেষভাবে সে বুঝিতে পারিল ঘর খালি । উনানে বসানো কেটলিতে যেমন হঠাৎ শো শে আওয়াজ শুরু হয় এবং খানিক পরে আওয়াজ কমিয়া জল ফুটিতে থাকে, ঘনশ্যামের মাথাটা তেমন খানিকক্ষণ শবিদত হইয়া থাকিযা থাকিয়া ভাঙা ভাঙা ছাড়া ছাড়া চিন্তায় টগবগ করিয়া উঠিল। হৃৎপিণ্ড পাজরে আছাড় খাইতে শুরু করিয়াছে। গলা শুকাইয়া গিয়াছে। হাত পা কঁাপিতেছে ঘনশ্যামের। নির্জন ঘবে টেবিল হইতে তুলিয়া একটা ঘড়ি পকেটে রাখা এত কঠিন । কিন্তু দেরি করা বিপজ্জনক। ঘড়িটা যদি তাকে নিতেই হয়, অবিলম্বে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দেরি করিতে করিতে হয়ত শেষ পর্যন্ত সে যখন ঘড়িটা তুলিয়া পকেটে ভরিতে যাইবে ঠিক সেই সময় কেহ ঘরে ঢুকিয়া সব দেখিয়া ফেলিবে। কেউ না দেখিলে তার কোন ভয় নাই। সদ্যবংশজাত শিক্ষিত ভদ্রসন্তান সে, সকলে তাকে নিরীহ ভালোমানুষ বলিয়া জানে, যেমন হোক অশ্বিনীর সে বন্ধু। তাকে সন্দেহ করার কথা কে ভাবিবে! ঘড়ি সহজেই হারাইয়া যায়। চাকর ঠাকুর চুরি করে, সন্ন্যাসী ভিখারী চুরি করে। শেষবার ঘড়ি কোথায় খুলিয়া রাখিয়াছিল মনে পড়িয়াও যেন মনে o afiş qçırıq?titlergisi o