পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক & ( আরও আধঘণ্টা হয়ত সে এমনিভাবে পড়িয়া থাকিত, কিন্তু যাওয়ার তাগিদটা মনে তার এতই প্ৰবল হইয়াছিল যে, ঘনশ্যাম ঘরে ঢোকামাত্র ব্যস্তভাবে উঠিয়া বসিয়া বলিল, “ভালই হল, এসে পড়েছিস আর এক মিনিট দেখে চলে যেতাম ভাই । ডাক্তার আনলে না ?” ‘ডাক্তার ডাকতে যাইনি। টাকার খোজে বেরিয়েছিলাম।” শ্ৰীনিবাস ক্লিষ্টভাবে একটু হাসিল,-দু’জনেরি সমান অবস্থা। আমিও টাকার খোজেই বেরিয়েছিলাম, ওনার বালা দু’টো বাধা রেখে এলাম। শেষ রাতে খোকারও যায় যায় অবস্থা-অক্সিজেন দিতে হল।” একটু চুপ করিয়া কি ভাবিতে ভাবিতে শ্ৰীনিবাস আস্তে আস্তে সিধা হইয়া গেল, “আচ্ছা, আমাদের সব একসঙ্গে আরম্ভ হয়েছে কেন বলত ? একমাস আগে-পরে চাকরি গেল, একসঙ্গে অসুখবিসুখ শুরু হল, কাল রাত্রে এক সময়ে এদিকে সস্তুর মা ওদিকে খোকা-? দুর্ভাগ্যের এই বিস্ময়কর সামঞ্জস্য দুই বন্ধুকে নির্বাক করিয়া রাখে। বন্ধু তারা অনেক দিনের, সব মানুষের মধ্যে দু’জনে তারা সব চেয়ে কাছাকাছি। আজ হঠাৎ পরস্পরকে ঘনিষ্ঠতর নিকটতর মনে হইতে থাকে। দু’জনেই আশ্চর্য হইয়া যায়। ‘টাকা পেলি না ? घनश्jiभ भांथों नांछिल । ‘গোটা দশেক টাকা রাখ। নিখিলবাবুকে একবার আনিস।” পকেট হইতে পুরনো একটা চামড়ার মনিব্যাগ বাহির করিয়া কতকগুলি ভাজ করা নোট হইতে একটি সন্তৰ্পণে খুলিয়া ঘনশ্যামের হাতে দিল। কিছু আবেগ ও কিছু অনির্দিষ্ট উত্তেজনায় সে নার্ভাস হইয়া পড়িয়াছে। তার স্ত্রীর বালা বিক্রির টাকা, মরণাপন্ন ছেলের চিকিৎসার টাকা! আবেগ ও উত্তেজনায় একটু কাবু হইয়া ঝোকের মাথায় না দিলে একেবারে দশটা টাকা বন্ধুকে সে দিতেই বা পরিবে কেন। ‘গোলাম ভাই। বসবার সময় নেই। একেবারে ডাক্তারবাবুকে নিয়ে যাব।” একটু অতিরিক্ত ব্যস্তভাবেই সে চলিয়া গেল। নিজের উদারতায় লজ্জা পাইয়া বোধ হয় অস্বন্তি বোধ করিতেছিল। দু’মিনিটের মধ্যে আরও বেশী ব্যস্তভাবে সে ফিরিয়া আসিল । আতঙ্কে ধারা গলায় বলিল, “ব্যাগটা ফেলে গেছি।” “এখানে ? পকেটে রাখলি যে ? “পকেটে রাখবার সময় বোধ হয় পড়ে গেছে।’ তাই যদি হয়, তক্তাপোশে পড়িয়া থাকার কথা। ঘনশ্যামকে টাকা দিয়া পকেটে o x-fistfits o