পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RRe বিবেক করিল। নোটগুলি পকেটে রাখিয়া ব্যাগটা হাতে করিয়াই চলিতে চলিতে এক সময় আলগোছে ব্যাগটা রাস্তায় ফেলিয়া দিল। খানিকটা গিয়া মুখ ফিরাইয়া দেখিল, ছাতি হাতে পাঞ্জাবি গায়ে একজন মাঝবয়সী গোফওয়ালা লোক খালি ব্যাগটার উপর পা দিয়া দাড়াইয়া কতই যেন আনমনে অন্যদিকে চাহিয়া আছে। ঘনশ্যাম একটু হাসিল। একটু পরেই ব্যাগটা তুলিয়া লইয়া লোকটি সরিয়া পুড়িবে। হয়ত কোন পার্কে নির্জন বেঞ্চে বসিয়া পরম আগ্রহে সে ব্যাগটা খুলিবে। যখন দেখিবে ভিতরটা একেবারে খালি, কি মজাই হইবে তখন ! খুচরা সাড়ে সাত আনা পয়সা পর্যন্ত সে ব্যাগটা হইতে বাহির করিয়া লইয়াছে। স্টপেজে ট্রাম থামাইয়া ঘনশ্যাম উঠিয়া পড়িল। খুচরা সাড়ে সাত আনা পয়সা থাকায় সুবিধা হইয়াছে। নয়ত ট্রামের টিকিট কেনা যাইত না। তার কাছে শুধু দশ টাকা আর পাঁচ টাকার নোট । অশ্বিনীর বৈঠকখানায় লোক ছিল না। তার নিজের বসিবার ঘরটিও খালি ! টেবিলে কয়েকটা চিঠির উপর ঘড়িটা চাপা দেওয়া ছিল, চিঠিগুলি এখনো তেমনিভাবে পড়িয়া আছে। ঘড়িটি চিঠিগুলির উপর রাখিয়া ঘনশ্যাম বৈঠকখানায় क्रिया दग्निब्ल । বেল টিপিতে আসিল পশুপতি—“বাবু যে আবার এলেন ?? ‘বাবুর সঙ্গে একবার দেখা করব।” ভিতরে গিয়া অল্পক্ষণের মধ্যেই পশুপতি ফিরিয়া আসিল । “বিকেলে আসতে বললেন ঘনোসংখ্যামবাবু, চারটের সময়।” ঘনশ্যাম কাতর হইয়া বলিল, “আমার এখুনি দেখা করা দরকার, তুমি আরেকবার বলে গিয়ে পশুপতি। বোলো যে ডাক্তার সেনের কাছে একটা চিঠির জন্য এসেছি।” তারপর অশ্বিনী ঘনশ্যামকে ভিতরে ডাকিয়া পাঠাইল, অর্ধেক ফি’তে মণিমালাকে একবার দেখিবার জন্য অনুরোধ জানাইয়া তার বন্ধু ডাক্তার সেনের নামে একখানা চিঠিও লিখিয়া দিল। ক্ষমতা ও প্ৰতিপত্তির এইসব লীলাখেলা অশ্বিনী ভালবাসে, নিজেকে তার গৌরবান্বিত মনে হয়। চিঠিখানা ঘনশ্যামের হাতে দেওয়ার আগে সে কিন্তু একবার জিজ্ঞাসা করিল, ‘ফি'র টাকা বাকী রাখলে চলবে না। কিন্তু। আমি অপদস্থ হব। টাকা আছে তা ?’ ঘনশ্যাম বলিল, “আছে। ওনার গয়না বেচে দিলাম, কি করি ” of tto o