পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

49e নেকী অশোক জবাব দিলে না, একটু হাসল। হঠাৎ নেকী বললে, আপনার খিদে পেয়েছে ? আম খাবেন? অশোক ঘাড় নাড়ল । আম খাবেন না ? তাহলে কী দিই। কাল সন্দেশ করেছিলাম, গোটা চারেক আছে বোধ হয়, তাই খান তবে । অশোক আবার ঘাড় নাড়ল । ঘাড নাড়ছেন যে খালি ? ইচ্ছেটা কি ? ইচ্ছে কিছু না খাওয়া। বাড়ি থেকে যতদূর সাধ্য খেয়ে বার হয়েছিলাম, খিদে নেই। নেকী মুখ গোজ করে বললে, হু! রাগ হল ? আচ্ছা দাও, খাব। থাক। খিদে না থাকলে খেতে নেই। অশোক তৎক্ষণাৎ বললে, খিদে যেন পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, এতক্ষণ বুঝতে পারি নি। কি দেবে দাও, খেয়ে নি। নেকী হাসিমুখে খাবার নিয়ে এল। শুধু সন্দেশ নয়, আমিও কেটে দিল। ঘয়েই ছিল। কোণের কলসী থেকে জল গডিয়ে দিল । অশোক নিঃশব্দে আহারে মন দিল । নেকী বললে, খেতে খেতে কথা বলুন, চুপ করে থাকতে ভাল লাগে না। कि दलद ? যা খুশি। যা খুশি নয়, অশোক নেকীর কথাই পাড়ল। একটু একটু করে নেকীর জীবনের যে ইতিহাস সে শুনল তাতে অবাক হয়ে গেল। বড়লোকের মেয়ে, কলকাতায় বাবার ব্যবসা ছিল । মা কবে মারা গিয়েছিলেন, নেকীর মনে নেই। পিসীমাই তাকে মানুষ করেছে। কি সব কারণ ঘটেছিল নেকী জানে না, তার যখন ষোল বছর বয়স, ব্যবসা ফেল পড়ল। বাজারে দেউলিয়া নাম জাহির হবার আগেই বন্দুকের গুলিতে নিজের মাথাটা ফুটো করে দিয়ে নেকীয় বাবা সব দায় এড়িয়ে গেলেন। আপনার বলতে এই মামা, চোখ মুছতে মুছতে বছর দুই আগে পিসীমাকে নিয়ে এই মামার আশ্রয়ে এল। পিছনে ফেলে এল আজন্ম-অভ্যন্ত শৌখিন জীবন। o avvuttrici o