পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

šo ফুটাইতে পারবে কে জানে। যত দিন যাইবে অভাব ততই বাড়িয়া চলিবে। কাদুর ধৈৰ্য যখন একবার ভাঙিয়া গিয়াছে, রাগ এবং বিরক্তি তাহার অভাবের অনুপাতে বাড়িবে বই কমিবে না। মধুর ঘুম আসিল না। শুইয়া শুইয়া সে আকাশ-পাতাল ভাবিতে লাগিল। কিছুদিন আগে সে খবর পাইয়াছিল, গ্রামের রাখাল মিত্র অনেকগুলি নগদ টাকা সঙ্গে লইয়া বাড়ি আসিয়াছে। রাখাল মিত্রের বাড়িটা কঁচা। রাখালের টাকা রাখিবার লোহার সিন্দুকও নাই। মধুর লোভ হইয়াছিল। রাখাল বাড়ি আসিলে রাখালের বেী স্বামিসেবার সুবিধার জন্য একটা ঠিক ঝি রাখে। ঘরের সন্ধান আনিবার জন্য অনেক বলিয়া কহিয়া কাদুকে রাজী করিয়া মধু তাহাকে রাখালের বাড়ি কাজ করিতে পাঠাইয়াছিল। বলিয়াছিল, ‘একদিনের তরে যা কাদু। খবরটা এনে দে । একদিন কাজ ক’রে পোষালো না বলে চলে আসিস, আর তোকে যেতে হবে না।” কাদু বলিয়াছিল, “হে ভগবান ! শেষকালে বিগিরি পৰ্যন্ত আদেষ্টে ছেল |’ কোন ঘরের কোনদিকে রাখাল ঘুমায়, তার ছেলে পান্নালাল কোন ঘরে শোয়, রাখালের ঘরের কোথায় বাক্স-প্যাটরা থাকে, এসব খবর কাদু তাকে আনিয়া দিয়াছে। কিন্তু সেই হইতে নিজেও সে যেন কেমন বদলাইয়া গিয়াছে। প্রথমটা মধু অত খেয়াল করে নাই। ভাবিয়াছিল, ঝির কাজ করিতে পাঠানোয় কাদুর বুঝি রাগ হইয়াছে, সে অভিমান করিয়াছে, এ আর কী-দিন স্থায়ী হইবে ? কিন্তু আজ কাদুর সুস্পষ্ট কলহ-ভাষণ ও নিষ্ঠুর আচরণের পর তাহার পরিবর্তনের ইতিহাস মধুর আগাগোড়া মনে পড়িতে লাগিল। ইহাকে সাময়িক ক্ৰোধ ও বিরক্তি মনে করিয়া স্বন্তিলাভের সাহস তাহার। আর রহিল না । সবচেয়ে বেশী করিয়া মধুর মনে পড়িতে লাগিল। এই কথা যে, কাদু জরের কদিন ভাল করিয়া তাহার সেবা করে নাই, সময় মত খাইতে দেয় নাই, না ডাকিলে কাছে আসে নাই। সর্বদা কিরকম অন্যমনস্ক থাকিয়াছে। একদিনের বেশী তাহার দাসীবৃত্তি করিবার কোন প্রয়োজন ছিল না, তবু বিশেষ করিয়া বারণ করা সত্বেও তাহাকে অসুস্থ রাখিয়া সে রাখালের বাড়ি কাজ করিতে চলিয়া গিয়াছে। কৈফিয়ত দিয়াছে, “হঠাৎ কাজ ছেড়ে দিলে লোকে সন্দ” করবে। যে ” ‘সন্ধা’ করবে-না-করবে। আমি বুঝব। তুই আর ঘাসনে কাদু।” e tiče potritoci o