পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ச ফঁাসি রামার ঘরের দরজায় কান পাতিয়া ভিতরের শব্দ শুনিবার চেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু আর কোন দিন কিছু শোনা যায় নাই । শোনা যাইবে কি, রমা কি সহজ মেয়ে ! হোক না। স্বামীর ফাসি, সে দিব্যি মন্ত একটা ঘরে সারারাত এক নাক ডাকাইয়া ঘুমাইতে পারে। আজ হঠাৎ অক্ষুদ্টম্বরে একবার ‘মা গো” বলিয়া ফেলিয়াছে বলিয়াই ওর যে কিছু হইয়াছে একথা মনে করিবার কোন প্ৰয়োজন নাই ! মিষ্টার দে’র কড়া সিগার টানিয়া পশুপতির বোধ হয় গলাটা খুসখুসি করিতেছিল, সে আর একবার গলা সাফ করিয়া বলিল, রেণুর জন্য তুমি ভেব না গণু। ওকে আসতে দেয়নি বটে, কিন্তু ওকে কষ্ট ওরা দেয় না। বিবাহের পর প্রথম শ্বশুরবাড়ি গিয়া আর আসিতে না দিলে, ষোল বছরের মেয়েকে কষ্ট দেওয়া হয়। কিনা, গণপতি ধারণা করিয়া উঠিতে পারিল না ; কিন্তু বোনটার জন্য তার নিজের বড় কষ্ট হইতে লাগিল। মৃদুস্বরে সে বলিল, ওকে একটা তার করে দিলে হত না ? পশুপতি বলিল,-তোমার কথা ? থাকগে, কাজ নেই, কি আর হবে ওতে ? মাঝখান থেকে বাড়ির লোকে হয়ত অসন্তুষ্ট হবে। কাল খবরের কাগজেই সব পড়তে পারবে । খবরের কাগজ ? তা ঠিক, খবরের কাগজে কাল সব খবরই বাহির হইবে বটে। কিন্তু রেণু কি খবরের কাগজ পড়িতে পায় ? ভাই খুনের দায়ে ধরা পড়িয়াছে বলিয়া অতটুকু মেয়েকে যারা আটক করিয়া রাখিতে পারে-এতখানি উদারতা কি তাদের হওয়া সম্ভব ? গণপতি পরিমলের ছেলেকে মেঝেতে নামাইয়া দিয়া বলিল, তবু আপীলের ফলটা আগে থাকতে জানতে পারলে রাজেন্দ্ৰ বলিলেন, তাই বরং দাও পশু, রেণুর শ্বশুরকে একটা তার ক’রে দাও । লিখে দিও ‘প্লিজ ইনফর্ম রেণু"-নয়ত সে ব্যাটা হয়ত মেয়েটাকে কিছু জানাবে না। তার লিখিতে পশুপতি আপিস ঘরে গেল । মানুষের মধ্যে খোজ করিলে সব সময়েই মানুষকে খুজিয়া পাওয়া যায়, পাশবিকতা দিয়া হােক, দেবত্ব দিয়া হােক, কে নিজেকে সম্পূর্ণ ঢাকিয়া রাখিতে পারে ? বত্ৰিশ বছর যে পরিবারে গণপতি সহজ স্বাভাবিক জীবনযাপন করিয়াছে, আজ সেখানে একটা বীভৎস অসাধারণত্ব অর্জন করিয়া ফিরিয়া আসিয়া সে o sify critics to