পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকম্প PS ভিজাইয়া প্ৰসন্ন নীরবে আগাগোড়া সবটাই শুনিল। বড়বাবুর কন্যাটিকে সে দেখিয়াছে। লোভ করা যায় এমন সে মেয়ে, তাছাড়া বাপ তার বড়বাৰু৷ হইলে সব দিক দিয়া ভালই হয়। প্ৰসন্ন কিন্তু কিছুমাত্র উৎসাহ পাইতেছিল না। এমন একরাশি কালো চুল পিঠে ছড়াইয়া অল্প বিরক্তিতে ভ্রা-দুটি অমনভাবে একটুখানি কুঁচকাইয়া যে মেয়ে ওরকম আশ্চর্ষকণ্ঠে বলিতে পারে “বাবা বাড়ি নেই? তাহাকে বিবাহ করা কি ভয়ের কথা ? ও-মেয়ের সঙ্গে এক একঘরে বসিয়া আছে কল্পনা করিলেও তাহার বুকের মধ্যে টিপচিপ করিতে থাকে। ওকে বিপদ বলিয়া ভাবা যায়, বউ বলিয়া কোন মতেই যেন ভাবা যায় না। এদিকে বড়বাবুকে না বলিবার সাহসই বা সে কোথায় পায় ? বড়বাবুর বুদ্ধি-বিবেচনার উপর প্রসন্নর শ্রদ্ধা কমিয়া গেল। নিজের ঘরে ফিরিয়া গিয়া সে ভাবিতে লাগিল, নিজের মেয়ের উপরেও কি লোকটার কিছুমাত্র মমতা নাই ? আমন মেয়েকে কি বলিয়া তাহার মত লোকের হাতে সঁপিয়া দিতে চায় ? দেশে কি সুপাত্রের অভাব ঘটিয়াছে ? যেখানে বসিয়া প্ৰসন্ন কাজ করে তার পাশেই প্ৰকাণ্ড একটা জানালা। পাচসাতজন মানুষ একসঙ্গে গলিয়া যাইতে পারে জানালাটা এত বড়। শিক নাই। তা তিনতলার জানালায় শিকের কি প্রয়োজন ? গালিয়া পড়া সহজ বলিয়াই কে আর তিনতলার জানাল দিয়া গালিয়া নিচে পড়িতেছে ? মানুষ ত পাগল নয় ! কাজ করিতে করিতে প্ৰসন্ন বার-বার জানালায় উঠিয়া যায়। শহরটা ইটের বটে। পথ দিয়া গাড়ি-ঘোড়ার আর মানুষের স্রোত বহিয়া যায়, পথটা যেন নদী । নিচু ফুটপাথটার দিকে চাহিয়া প্ৰসন্নর গা একটু ছমছম করে। লিফটে উঠিবার সময় যেমন হয় তেমনি একটা অনুভূতি, কেবল তীব্ৰতা কম। १ऊँौद्ध किस्तु ऊँौद्ध नभ । আজ বিচলিত মন লইয়া খোলা জানালায় দাড়াইয়া প্ৰসন্ন প্ৰথম অনুভব করিল যে, ফুটপাথটা আসলে বেশী নিচু নয়, তিনতলার মানুষের অনায়াস মরণ বিছানো আছে বলিয়াই অত নিচু মনে হয়। ফুটপাথের চৌকা পাথরের প্রান্তগুলি সে বেশ দেখিতে পাইতেছে, একটা কলার খোসা পড়িয়া আছে ইহাও তাহার লক্ষ্য এড়ায় নাই। প্ৰসন্ন এক দৃষ্টিতে কলার খোসাটার দিকে চাহিয়া রহিল। তিনতলা হইতে লাফাইয়া পড়িলে মানুষ বঁাচে কিনা। এই কৌতুককর সমস্যাটা তাহাকে হঠাৎ আজ বিত্রত করিয়াছে। a v-fits us o