পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in অতসী মামি SR OS শূনলি মুকুল ? ওরা অতবড়ো ছেলে কঁাটা বেছে মাছ খেতে পারে না, আর ওই একরাত্তি মেযে গেলাস থেকে আপনি জল খাবে ? মাসির তুলনাটা শোনো দাদা! মাসির মেয়ের চেয়ে খোকা যে দেড় বছরের ছোটো! সবটাই তার নিজের অপমান। নিজের বোন নিজের মাসি আজ তাহাকে এমন করিয়া মধ্যস্থ মানে। দুজনকে ধমক দিবার ক্ষমতা আজ তাহাব নাই। ইহাদের হীনতাকে আজ তাহাব পাশ কাটাইয়া মাইতে দিতে হইল। শশীমুখীর পিঠে চাবির যে গোছােটা এক পরল। কাপড়ের নীচে চাপা পড়িয়া গিয়াছে, আমনি লোহার চাবি দিযা এতকাল পরে আজিকার বিশেষ দিনটিতে ভাগ্য একে একে তাহার। আপনজনের হৃদয়ের সিন্দুক খুলিয়া ভিতরেব জঞ্জাল দেখাইতেছে, মুকুল যত স্নেহ দিয়াছিল তার খানিক হইয়া আছে বুপাব টাকা, খানিক ধূলা আর খানিক আটকানো ভ্যাপসা বাতাস! মুকুলের মনে হইল, দেশে সে সত্যসত্যই বেড়াইতে আসিয়াছে, বেড়াইতে আসা ভিন্ন এই তােমাদি হইয়া যাওয়া পাওনার সন্ধানে নিজের সেই শান্তিহীন তৃপ্তিহীন সুখের নীড় ছাডিয়া এতদূর আসার কোনো মানেই হয় না । খানিক পাবে মা স্মাসিলেন । মন্ত্রগুলো কি বলে উঠতে পাবি? যত তাড়াতাডি কবতে যাই তত সব জড়িয়ে যায় জিভে । কী রোগটাই হয়ে গেছিস মুকুল! এমন ছিরি তুই কী করে করলি ? প্ৰণামোদ্যত ছেলেকে মা বুকে জডাই যা ধাবিলেন, কাদিয়া বলিলেন, সোনাব্য ববন কালি হয়ে গেছে! গামো মাথাব্য পবম ব্যাকুলতার সঙ্গে হাত বুলাইয়া বুলাইয়া মা ছেলেকে চিনিযা নিতে লাগিলেন,--তাহাব বস্তু ছেলে, তাহার সোনার চাদ ছেলে। পাড়ায় এমন ছেলে নাই, শহরে এমন ছেলে নাই, দেশে এমন ছেলে নাই । মাল ভালোবাসা সহ্য করিবাব বন্যাস ও হৃদয় মুকুলের ছিল না, নিজেকে সে মুক্ত করিয়া নিল, চেযাবে বসিযা বলিল, তোমাব শরীরও তো ভালো নেই মা ? কণ্ঠস্ববেক পার্থক্য লক্ষ করিবার বিযয়। মার কথায় যেন কাব্যোব আবির্ভাব আছে বলিবাব ভঙ্গিতেই তাহা মধুর,——মুকুলের শুধু বক্তবা। তবু মুকুল খুশি হইল না। নিজেব কাঠিন্যের কষ্ঠিপাথরে মাব মমতা সোনার দাগ কাটিয়া গেল, কিন্তু সে দাগে আগের মতো ঔজ্বল্য যেন নাই, কেমন মেটে-মেটে হইয়া গিয়াছে। মার চোখে ঠিক উচিত পবিমাণে জল ঝরিল কই ? আসিবে না। আসিবে না করিয়া যে সন্তান এতকাল পাবে আসিয়াছে তাকে বুকে নিয়াও তার আসতে মারি অবিশ্বাস রহিযা গেল কোথায়? তাব বঁচিযা থাকাটাই মার কাছে আর ভয়ংকব বিস্ময়ের ব্যাপার যেন নয়, তাব সেই একফোটা মুকুল কোথায় সেই লঙ্কায় গিয়া পাঁচ পাঁচটা বছব কাটাইয়া আসিল, ইহার অভিনবত্ব মা আর তেমনভাবে আয়ত্ত করিতে পারিতেছেন না। বহু পুরাতন বিদায়-নেওয়াব দিনটির কথা মনে করিয়া মুকুল আজ অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে মাকে বিচার করিল। হারানোর বেদনার সঙ্গে পাওয়ার আনন্দের তুলনা করিয়া ক্ষুন্ন হইবােব ক্ষমতা সে আয়ত্ত করিয়াছে, আজ তাই এতখানি যাচাই করা, এতখানি দর কষাকষি। বাস্তবিক, জীবন-যুদ্ধে জয় করিয়া আর হার মানিয়া এতখানি ভেঁাতা হইয়া গিয়াছে তার অনুভূতি, যে তার স্বার্থপরতার মধ্যে আজ প্লানির ফ্যাক্টরি বসিয়াছে। সে বুঝিতে পারে না হৃদয়ের পূর্বকৃত প্রাপ্যের সঞ্চায়ের মধ্যেই ভবিষ্যৎ পাওনার মূল্য। ভুলিয়া গিয়াছে বলিয়া বেচারির দেনা শোধ করা আজ মায়েরও সাধ্যাতীত। মানিক ১ম-১৪