পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOkS. in দিবারাত্রির কাব্য Sbrò আনন্দ বলল, আমার। চৌকিব বিছানা। তবে আনন্দের? প্রতি রাত্রে আনন্দের অঙ্গের উত্তাপ এই শয্যায সঞ্চিত হয় ? বালিশে আনন্দের গালের স্পর্শ লাগে? হেরম্ব নিজেকে অত্যন্ত শ্ৰান্ত মনে করতে লাগল। জুতো খুলে বলল, আমি একটু শূলাম আনন্দ। শূলেন? শূলেন কী রকম! তাঁর শয্যায় হেরম্ব শোবে শুনে আনন্দেব বোধ হয় লজ্জা করে ऎळेळ्न । মালতী বলল, শোও না, শোও। একটা উঁচু বালিশ এনে দে আনন্দ। আমার ঘর থেকে তোব বাপের তাকিয়াটা এনে দে। বরং। যে বালিশ তোর। হেরম্ব প্রতিবাদ করে বলল, বালিশ চাই না মালতী বউদি। উচু বালিশে আমার ঘাড় ব্যথা 56: 12 | মালতী হেসে বলল, কী জানি বাবু, কী রকম ঘাড় তোমার। আমি তো উচু বালিশ নইলে মাথাব্য দিতে পারি না! আচ্ছা তোমরা গল্প কর, আমি আমার কাজ করি গিয়ে। ওঁকে খেতে দিস আনন্দ। আনন্দ গম্ভীব হযে বলল, কী কাজ করবে। মা ? সাপনে বসবা । আজও তুমি ওই সব খাবে? একদিন না খেলে চলে না তোমার ? মালতীর মধ্যেও হেবঙ্গ বোধ হয়। সাময়িক কিছু পবিবর্তন এনে দিয়েছিল। রাগ না করে সে শান্তভাবেই বলল, কেন, আজি কী ? হেরান্স এসেছে বলে ? আমি পাপ করি না। আনন্দ যে ওব কাছ থেকে লুকোতে হবে। হেব্বস্বও খাবে একটু। আনন্দ বলল, হঁ্যা খাবে বইকী। অতিথিকে আর দলে টেনো না মা। মালতী বলল, তুই ছেলেমানুষ, কিছু বুঝিাসনে, কেন কথা কইতে আসিস আনন্দ ? হেরম্ব খাবে বইকী। তোমাকে একটু কাবণ এনে দি হেবম্ব ? বলে সে ব্যগ্র দৃষ্টিতে হেরম্বের মুখের দিকে তাকিয়ে বইল । হেবম্বেব অনুমানশক্তি আজি আনন্দসংক্ৰান্ত কর্তব্যগুলো সম্পন্ন করতেই অতিমাত্রায় ব্যস্ত হযেছিল। তবু নিজে কাবণ পান করে একটা অস্বাভাবিক মানসিক অ-স্থা অর্জন করার আগেই তাকে মদ খাওয়াবাব জন্য মালতীর আগ্রহ দেখে সে একটু বিস্মিত ও সন্দিগ্ধ হযে উঠল। ভাবলা, মালতী বাউদি আমাকে পরীক্ষা করছে নাকি? আমি মদ খাই কিনা, নেশায় আমার আসক্তি কতখানি তাই যাচাই করে দেখছে ? মালতী’ব অস্বাভাবিক সারল এবং ভবিষ্যতে আসা-যাওযা বজায রাখার জন্য তাকে অল্প সময়েব মধ্যে ঘনিষ্ঠতায় বেঁধে ফেলাব প্রাণপণ প্ৰয়াস স্মরণ করে হেরম্বের মনে হল মালতী যে সন্ধ্যা থেকে তার দুর্বলতার সন্ধান করছে—এ কথা হয়তো মিথ্যা নয়। মালতীর মনের ইচ্ছাটা মোটামুটি অনুমান হেরম্ব অনেক আগেই করেছিল। যে গৃহ একদিন সে স্বেচ্ছায় ত্যাগ করে এসেছে, মেয়ের জন্য তেমনি একটি গৃহ সৃষ্টি করতে চেয়ে মালতী ছটফট করছে। আশাবা চিরকাল বাঁচবে না। আনন্দের একটা ব্যবস্থা হওয়া দরকার। কিন্তু গৃহ যাদের একচেটিয়া তারা যে কতদূর নিয়মকানুনের অধীন সে খবর মালতী রাখে। কুড়ি বছরের পুরাতন গৃহত্যাগের ব্যাপারটা লুকিয়ে অনাথ যে তার বিবাহিত স্বামী নয় এ খবর গোপন করে, মেয়ের বিয়ে দেবার সাহস মালতীর নেই। অথচ আনন্দ যে পুরুষের ভালোবাসা পাবে না, ছেলে-মেয়ে পাবে না, মেয়েমানুষ হয়ে এ কথাটাও সে ভাবতে পারে না। আজ সে এসে দাঁড়ানোমাত্র মালতীর আশা হয়েছে। বারো বছর আগে মধুপুরে তার যে পরিচয় মালতী পেয়েছিল হয়তো সে ऊ ऊळ्गानि ।