পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in দিবারাত্রির কাব্য R&odŵ দেবার চেষ্টার মধ্যে তাব একটি প্রার্থনাব আর্তনাদ গোপন হযে থাকে, আমাকে শুদ্ধ করো, পবিত্র করো। অনাথের নিবৃপদ্রব নির্বিকাব ভাব মাঝে মাঝে হেরম্বকেও বিচলিত করে দেয়। সময় সময় তাব মনে হয, এও বুঝি এক ধবনের অসুখ। জ্বর যেমন উত্তাপ বেড়েও হয়, কমেও হয়, এবা দুজনে তেমনি একই মানসিক বিকারেব শান্ত ও অশান্ত অবস্থা দুটি ভাগ কবে নিয়েছে। কখনও কখনও এমন কথাও হেরম্বের মনে হয় যে, অনাথের চেয়ে মালতীরই বুঝি ধৈর্য বেশি, তিতিক্ষা কঠোবতর, অনাথেবা আধ্যাত্মিক তপস্যাল চেযে মালতীৰ তপস্যাই বেশি বিরাম-বিহীন। অনাথের বিষযান্তবের আশ্রয় আছে, অন্যমনস্কতা আছে, যৌগিক বিশ্রাম আছে,-মালতীব জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক লক্ষা, উদ্দেশ্য ও গতি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে একনিষ্ঠ। অনাথকে কেন্দ্র কবে সে পাক খাচ্ছে। অনাথ তার জগৎ, অনাথ তার জীবন, অনাথকে নিযে তাব বাগ দুঃখ হিংসা ক্লেশ, অনাথ তার অমার্জিত পার্থিবতাব প্রস্রবণ, তার মদের নেশার প্রেরণা, অনাথকে বাদ দিলে তাব কিছুই থাকে না। হেরম্বকে চোখ ঠেবে মালতী গম্ভীর মুখে অনাথকে বলল, কাল এক স্বপন দেখলাম। তুমি আর আমি যেন কোথায় গেছি,--—অনেক দূর দেশে। পোড়া দেশে আমরা দুজন ছাড়া আর মানুষ নেই, রাস্তাম ঘাটে, ঘাবে বাড়িতে সকেল মবে রয়েছে। 'অনাগ বলল, ভুলেও তো সৎ চিন্তা করবে না। তাই এ বকম হিংসার ছবি দ্যাখে। মালতী এ কথা কানেও তুললে না, বলে চলল, স্বপন দেখে মনটা খাবাপ হযে গেছে বাপু, যাই বল। আচ্ছা, চলে না। আমরা দুজনে একটু বেডিযে আসি কদিন ? ওদেব কঠিবদলটা চুকিয়ে দিযে যাই, ওরা এখানে থাকা! তুমি আমি বৃন্দাবনে গিয়ে ঘর বঁধি চলো! মালতীর গাম্ভীৰ্য্যকে বিশ্বাস কবে উপদেশ দেবাব ভঙ্গিতে অনাথ বলল, এখনও তোমার ঘর বীপবাব শখ আছে, মালতী ? বনে যদি যাও তো চলো। মালতী তব আকস্মিক বিপুল হাসিতে অনাথের ক্ষণিকেব। অন্তবওগতা চূৰ্ণ করে দিল। বলল, কেল, বনে যাবাব এমনকী বযেসটা আমার হযেছে শুনি ? বাধাবিনোদ গোঁসাই কঠিবদলেব জন্য সেদিনও আমায়া সোধে গেল না। y মেয়ে টেব পাবে বলে অপমান করে তাডিযে দিলাম, ডাকলেই আবার আসে । তোমাব চোখ নেই। ওই আমাকে বুড়ি দ্যাখো! না কী বলো, হেরম্ব ? আমি বুড়ি ? হেরম্বকে সে অবাব চোখ ঠাইেবল, বাধাবিনোদ গোসাইকে জােন, হেব্বস্ব ? মাঝে মাঝে আমায় দেখতে আর সাধতে আসে। ---লক্ষ্মীছাড়া ব্যাটা। চেহারা যেমন হোক, পক্ষ ‘া আছে। সেবাদাসীর খাতিরও জানে বেশ-শৌখিন বৈরিাগি। কিনা। তোমাদের এই মাস্টােবমশায়েব মতো কাঠখোট্টা নয। অনাথ বলল, কী সব বলছি, মালতী ? মালতী হঠাৎ ঢোক গিলে এদিক-ওদিক তাকায়। দৃষ্টি দিয়ে অনাথকে গ্রাস করতে তাৰ এই দ্বিধা দেখে হেব্বস্ব অবাক হয়ে যায়। কিন্তু মালতী নিজেকে চোখের পলকে বদলে ফেলে। ঔদ্ধত্যের সীমা তার কোনোদিনই নেই। সে হেসে বলে, বৈরিগি মানুষের মতো স্পজা কেন ? বলি না হেরম্বকে কাণ্ডটা।---শোনো হেব্বস্ব, বলি। এই যে গোবেচারি ভালো মানুষটিকে দেখছ, সাত চড়ে মুখে রা নেই, আমার জনো একদিন এ রাধাবিনোদ গোসাঁইয়ের সঙ্গে মারামাবি কবেছে। হাতাহাতি চুলেচুলি সে কী কাণ্ড হেধৰ্ম্মস, দেখলে তোমাব গায়ে কাটা দিগন্ত। আমি না। সামলালে সিদিন গোঁসাই খুন হযে যেত, হেরম্ব। আব আজকে আমি মরি-বাঁচি গ্ৰাহ্যি নেই! হেবম্ব বুঝতে পারে, কথার আডালে মালতী পুষ্পাঞ্জলির মতো অনাথের পায়ে নিবেদন বর্ষণ করছে- যেদিন ছিল সেদিন আবার ফিরে আসুক। হ্যা গো, চলো না, আমরা যাই ? মেয়ের মুখ চেয়ে আব্ব কতকাল আমায় কষ্ট দেবে? তোমার সঙ্গে কথা কইলেই তুমি বড়ো বাজে বকো, মালতী।