পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in WSDO8 মানিক রচনাসমগ্ৰ আমার পোডা কপাল তাই মরণ নেই। অনাথ হাল ছেড়ে দিয়ে বলল, তুমি বুঝতে পার না, মালতী। পবিত্র অপবিত্ৰ স্পর্শেব জন্য শুধু নয়, আসনে আমি যেরকম অবস্থায় থাকি আমাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে হয়, কোনো কারণে হঠাৎ বাহ্যজ্ঞান ফিরলে বিপদ ঘটে। আমি আজ মরেও যেতে পারতাম। মালতী কোনো সময হার স্বীকার করে না। বলল, এমন আসনে তবে বসা কেন ? অনাথ বলল, সে তুমি বুঝবে না। কিন্তু আজ তো তোমার জন্মদিন নয়—কাল। আজি তো আগেব দিন।---আজ আমার জন্মদিনেব পােরণ। অনাথ আব্ব তর্ক কবল না । ঘরের কোণে টাঙানো দড়ি থেকে একখানা শুকনো কাপড় নিযে ঘর ছেড়ে চলে গেল। মালতী বসে রইল মুহামনা হয়ে। সেও আগাগোড়া ভিজোছে। তাকে কযেকটা সদুপদেশ দেবার ইচ্ছা হেব্বস্ব জোর করে চেপে গেল। এত কাণ্ডের পরেও আনন্দ এ ঘবে আসেনি। খেয়াল করে সে উশাখুশ করতে লাগল। দেখিলে, হেরম্ব ? এ প্রশ্নের জবাব হয় না, মন্তব্য হয় । হেরম্ব সাহস পেল না। এমন জানলে কে মিনাসেকে ঠাট্টা করতে যেত! এ আপনার ঠাট্টা নাকি মালতী বউদি? মালতী বেগে বলল, কী তবে ? সংকেত্তন ? আবোলতাবোল বোকো না বাপু, মাথাস আগন জ্বলছে, মন্দ কিছু বলে বসব। কাল আমার জন্মদিন। জন্মদিনে শ্ৰীচরণে ঠাই পাই। বছবে ওব এই একটা দিনরাত্তির আমাৰ সঙ্গে সম্পর্ক,—হেসে কথাও কয়, ভালোও বাসে।— গা ছুঁয়ে বলছি ভালোবাসে, হেরম্ব! মালতী মূচকে মুচকে হাসে, কেন তা জানি না বুঝি ? শোনা বলি। সেই গোড়াতে, মাথাটা যখন পর্যন্ত ওর খারাপ হয়নি, তখন পিতজ্ঞে করিয়ে নিয়েছিলাম আল যেদিন যা খুশি কবি বাপু, কথাটি কাইব না, আমার জন্মদিনে সব কুকুম মেনে চলবে। পাগল হলে কী হবে হেরান্স, পিতিজ্ঞেব কথাটি ভোলেনি। মুখ বুজে। আজও মেনে চলে। মালতী বিজয়-গর্বে হাসে, বিষ খেতে বললে তাও খায়, হেরম্বস। অনাথের এটুকু দুর্বলতা হেরম্ব কল্পনা করতে পারে। এবার জন্মদিনে তাই বরং মাস্টােবমশাইকে খেতে দেবেন, মালতী বউদি। শুনে মালতী আগুন হয়ে হেরম্বকে ঘর থেকে বার করে দেয়। হেরম্ব আর কোথায় যাবে, প্রথম রাত্ৰিতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাড়ির পিছনে প্রাচীর ডিঙিয়ে অদূরবর্তী যে আমবাগান তার চোখে অরণ্যের মতো প্রতিভাত হয়েছিল, বানপ্রস্থাবলম্বীব মন নিয়ে হেরম্ব সেইখানে গেল। এখানে আছে ভোরে পাখির ডাক আর অসংখ্য কীটপতঙ্গের প্রণয়। পচা ডোবার জলে হয়তো অ্যামিবা আত্মপ্রণয়ে নিজেকে বিভক্ত করে ফেলছে, তরু-বন্ধলের আড়ালে পিপীলিকার চলেছে শুড়ে শুড়ে প্রণয়ভাষণ, হেরম্বের পায়ের কাছ দিয়ে এক হয়ে এগিয়ে চলেছে কর্ণজলীেকা দম্পতি, গাছের ডালে ডালে একজোড়া অচেনা পাখির লীলাচাঞ্চল্য। অনেকক্ষণ পরে সে ঘরে ফিরে আসে। জানােলা দিয়ে তাকিয়ে মন্দির-চত্বরে সমবেত ভক্তবৃন্দের মধ্যে সুপ্রিয়াকে আবিষ্কার করতে তার বেশিক্ষণ দেরি হয় না। তখন পূজা ও আরতি শেষ হয়েছে। মালতী বিতরণ করছে মাদুলি। তার কাছে বসে সুপ্রিয়া তীব্রভৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আনন্দের দিকে। হেৰম্ব মিলিয়ে দেখল কদিনের বর্ষার পর আজ যে বঁাজালো রোদ উঠেছে, সুপ্রিয়ার চােখের আলোর ལས་ཅན་ན་སྐུ་ ܓ݁ܶܓ݂ܶܬ݂ ܓ݂ܛܠ KÑIN