পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOk.S. in দিবারাত্রির কাব্য ᏔᏍᏅᏩ জন্যই এখানে এসে হেরম্ব সুপ্রিয়াকে একখানা পত্র লিখেছিল। সুপ্রিয়া যে তাকে দিয়ে চিঠি লেখার প্ৰতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিল তা নয়, কথা ছিল ঠিকানা জানাবার। চিঠি না লিখে একজনকে ঠিকানা জানানো যায না বলে হেরম্ব বাধ্য হয়ে একখানা চিঠিই লিখেছিল। ঠিকানা দিয়ে তার দুটি দরকারের কথা সুপ্রিয়া স্বীকার করেছিল। প্রথম, মাঝে মাঝে চিঠি লিখে হেরম্বকে সে তাব কথা ভুলতে দেবে না। দ্বিতীয়, হেরম্ব কোথায় আছে জানা না থাকলে তার যে কেবলই মনে হয় সে হারিযে গেছে, অসুখে ভুগছে, বিপদে পড়েছে---এই দুশ্চিন্তাগুলির হাত থেকে সে রেহাই পাবে। খুশিমতো কাছে এসে হাজির হওয়ারও একটা তৃতীয় প্রয়োজনও যে তার থাকতে পাবে হেবৰ্ম্ম আগে তা খেয়াল করেনি। একটা নিশ্বাস ফেলে সে মন্দির-চত্বরে ভক্তদেব সভায় গিয়ে বসল। কবে এলি সুপ্রিয়া ? সে যেন জানত সুপ্রিয়া পুরীতে আসবে। কবে এসেছে তাই শুধু সে জানে না। এসেছি। পবশ্ব। আপনি এখানে কদিন আছেন ? আক্ত নিযে পনেরো দিন। দিন গোনাব স্বভাব তো আপনার ছিল না? বলে সুপ্রিয়া আনন্দের দিকে কুটিল কটাক্ষপাত করল। হোিবশ্ব হেসে বলল, এমনি অনেকগুলি স্বভাব আমি অর্জন করেছি। সুপ্রিয়া, যা আমার ছিল না। আগেই তোকে বলে বাখলাম পাবে আব্ব গোল করিসনে । মালতী বৃক্ষ স্বাবে বলল, বডে গোল হচ্ছে। এদেব ঘবে নিযে গিয়ে বস না আনন্দ পা এটা আডিডা দেবাক বৈঠকখানা নযা। সুপ্রিয এ কথাফা অপমানিত বোধ করে বলল, আমি বরং আজ যাই ! আনন্দ বলল, না না, যাবেন কেন? ঘরে গিযে বসবেন চলুন। হেব্বাসও আমন্ত্রণ জানিযে বলল, আযা সুপ্রিয়া। অপমান ভুলে সুপ্রিযা ঘরে গিয়ে বসতে রাজি হল। হেরম্ব জানত বাজি সে হবে। এতক্ষণ মালতী ও আনন্দোব সঙ্গে সুকৌশলে আলাপ করে সে কতখানি জ্ঞান সঞ্চয় কবেছে হেরান্স তা জানে না, কিন্তু আনন্দকে দেখার পর এই জ্ঞানলাভের পিপাসা তার অবশ্যই এমন তীব্র হয়ে উঠেছে যে, আরও ভালো করে সব জানিবার ও বুঝবার কোনো সুযোগই সহজে আজ সে ত্যাগ করবে না। তাব ভালো কবে জানা ও বোঝাটাই ঠিক কী ধবনেব হবে হেব্বস্ব তাও অনুমান কবিতে পাবছিল । অনুমান করে তাব ভয় হচ্ছিল। ভযের কথাই। চোখের সামনে ভবিষ্যৎকে ভেঙে গুড়ে! হয়ে যেতে দেখে ভয়ংকব না হয়ে ওঠার মতো নিরীহ সুপ্রিযা এখন আব্ব নেই। মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে গল্প শুনে যে বড়ো হয়েছিল, বড়ো হয়ে ছোটাে ছোটাে কাজ করে, ছোটাে ছোটো সেবা দিয়ে আর সর্বদা কথা শুনে চলে যে ভালোবাসা জানাবাব চেষ্টা করেছিল, আজ হেরম্বের সাধা নেই তাকে সামলে চলে। অথচ, আজকের এই সুঙিন প্রভাতটিতে সে আর আনন্দ দুজনকেই সামলে চলার দায়িত্ব পড়েছে তার উপরে। জীবন-সমুদ্রে তাকে লক্ষ্য করে দুটি বেগবতী অর্ণবপোত ছুটে আসছে, সে সরে দাঁড়ালে তাদের সংঘর্ষ অনিবাৰ্য, সরে না দাঁড়ালে তার যে অবস্থা হওয়া সম্ভব তাও একেবারেই লোভনীয় নয়। আজ পর্যন্ত হেরম্বের জীবনে অনেকবার অনেকগুলি সকাল ও সন্ধায় কাব্যের অন্তর্ধান ঘটেছে। আজ সকালে কাব্যলক্ষ্মী শুধু যে পালিয়ে গেলেন তা নয়, তাব সিংহাসন যে-হৃদয়ে সেখানে প্রচুর অনর্থ ও রক্তপাতের সম্ভাবনাও ঘনিয়ে এল। অনাথের একটি কথা তার বারংবার মনে পড়তে লাগল ; মানুষ যে একা পৃথিবীতে বাঁচতে আসেনি। সব সময় তা যদি মানুষের খেয়াল থাকত! silk shy so