পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in WSS মানিক রচনাসমগ্র হবে না। নাওযা নেই, খাওযা নেই, ঘুম নেই, নিজেব চোখে যে না দেখেছে—এখনও যথেষ্ট করছে। ও মনে করে আমি বুঝি কিছুই চেযে দেখি না, আমার কৃতজ্ঞতা নেই। কিন্তু আপনাকে বলে রাখছি, ওর সেবা। আমি কখনও ভুলবো না। হেরম্ব বলল, তুমি ভুল করছি। অশোক, ও কৃতজ্ঞতা চায় না। জানি, জানি, ওব মন কত উচু আমি জানি না। সুপ্রিয়া বালিশ নিয়ে ফিরে আসায় এ প্রসঙ্গ থেমে গেল। অশোককে এ ঘরে দেখে সুপ্রিয সন্ধিগ্ধভাবে দুজনের মুখের দিয়ে চেয়ে দেখতে লাগল। বালিশটা মাদুরে ফেলে দিয়ে বলল, হেরম্ববাবু এখন ঘুমোবেন। চল আমরা যাই। অশোক উঠল।--আমি ওঁকে এ বেলা খাবার নেমন্তয় করেছি, সুপ্রিয়া। বেশ করেছি। নিজে বুধোগে, আমি পারব না। বলে সুপ্রিয়া হাসল। সুপ্রিয়াকে এত ঠান্ডা। হেরম্ব আর কখনও দেখেনি। বজপাতের শব্দে ঘুম ভেঙে হেরম্ব দেখতে পায় তার ঘুমের অবসরে আকাশে মেঘের সঞ্চার হয়ে বাইরে দারুণ দুৰ্যোগ ঘনিয়ে এসেছে। বাতাস বইছে সৗ সা শব্দে, উত্তাল সমুদ্রের গর্জন বেড়ে গেছে। উঠে ঘরের বাইরে যেতে গিয়ে হেরম্ব অবাক হয়ে যায়। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি শূনে সুপ্রিয়া এসে দরজা খুলে দেয়। ভারী তালা খোলার শব্দ হেরম্ব শুনতে পায। দরজা খুললে তালাটিকে সে খুঁজে পায় না। সন্দিগ্ধ হয়ে বলে, দেখি তোর হাত ? ওটা নয়, আচিলেব নীচে যেটা লুকিয়েছিস । কেন ? দেখা কী লুকিয়েছিস, তালা বুঝি ? দরজায় তালা দেওয়ার মানে ? সুপ্রিয়া হেসে বলে, মানে আর কী, পালিয়ে না যেতে পারেন। তাই। যে পালাই-পালাই স্বভাব! হেরম্ব বলে, আমাব ঘুমের মধ্যে অশোক বুঝি চোরা হাতে এদিকে আসছিল ? সুপ্রিয়া গলা নামিযে বলে, আস্তে কথা কইতে পারেন না? —তা আসেনি। আসতে পারত। হেরম্ব হেসে বলে, ও, তোর শুধু সন্দেহ! তুই সত্যি দারোগাব বউ, সুপ্রিয়া। সে গেছে কোথায ? giCM এই ঝড়বৃষ্টিব্য মধ্যে ছাদে ? সমুদ্র দেখতে গেছে। বললে, ঝড় উঠলে সমুদ্র কেমন দেখায় দেখবার এ সুযোগ ছাড়া উচিত নয়। আমাকেও জোবী করে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। একটু ধস্তাধস্তি করে পালিয়ে এসেছি। ধস্তাধস্তি কেন ? কারণ ছিল বইকী। আমায় ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেবার চেষ্টা করেছিল। যত সব বিদঘুটে হেরম্ব ফিরে গিযে মাদুরে বসল। ঘরের জানালা দুটি বায়ুর গতির দিকে খোলে, বন্ধ করার দরকাব হয়নি। বাইরে এমন দুর্যোগ নামলে আনন্দ তার ঘরে সমুদ্রের ঝিনুক নিয়ে খেলা করে, তার যখন খুশি তাকায়, যখন খুশি কথা বলে। তাদের নিজেদের প্রেমের সমস্যা ছাড়া সে ঘরে দুর্ভাবনার প্রবেশ নিষেধ। কারও জীবনের প্রভাব সেখানে নেই, সুপ্রিয়ারও নয়,--তাকে সে ভুলে যায়। কিন্তু সুপ্রিয়ার কাছে থাকলে একটি বেলার জন্যও তার রেহাই নেই। আবহাওয়া অবিলম্বে বৈদ্যুতিক হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনা ঘটে, দুঃসংবাদ পাওয়া যায়। তাদের মাঝখানে আর একটি জীবনের নাটকীয় অভিনয় عمX