পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা we)ዒó উপরে গিয়াছে, মানুষেব আর কত সহ্য হয় ? কাণ্ড দ্যাখো, এতদিনের বুপসি বউট এমন কুৎসিত হইয়াই বঁচিয়া উঠিল যে চোখে দেখিলে মাথা ঘোবে! ভালো এক আপদ আসিয়া জুটিয়াছিল,— শশী। মানুষকে ও মরিতেও দিবে না? গ্রামবাসী। কিন্তু যামিনীর মুখে অন্য কথা শোনে। শশীর চিকিৎসা ? চিকিৎসাই বটে। আমনি চিকিৎসা হলে রোগীকে আব্ব শিগগির শিগগির স্বর্গে যাবার ভাবনা ভাবতে হয় না। মেরেই ফেলেছিল। বসন্তের চিকিৎসা ও কী জানে? কত ওষুধপত্র দিয়ে আমিই শোযে । বলে, চোখটা গেল কি সাধে ? ওই লক্ষ্মীছাড়ার দু দাগ ওষুধ খেয়ে! এ সব কথা গোপালের কানো যায়। গ্রামের অনেকে গোপালের কাছে গিয়া বলে যে যামিনী কবিরাজ আচ্ছা নিমকহারাম, গোপালেব ছেলের নিন্দা করি যা বেড়াইতেছে। সংবাদটা বলিবার সময় অনেকে মনে মনে হাসে। গ্রামের লোকের অনুমানশক্তি প্রখর। সকালে আকাশে দিকে চাহিয়া তাহারা বলিতে পারে বিকালে বৃষ্টি হইবে। বিকালে যদি নেহাত বৃষ্টি না-ই হয় সে অপরাধ অবশ্য আকাশের। গোপাল যামিনী কবিবাজেব বউ আনিয়া দিবার পর গ্রামের লোক চাব-পাঁচ বছর ধরিয়া যাহা অনুমান কবিয়াছিল। তাহা যদি মিথ্যা হয় তবে পৃথিবীই মিথ্যা। অর্থাৎ সে অপরাধ গ্রামের লোকের অনুমানশক্তি ছাড়া জগতের তার সমস্ত কিছুর। তাই, যামিনী কবিরাজ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ দিবার সময় গভীর মুখে গোপালের দিকে চাহিয়া মনে মনে তাহারা হাসে। গোপালের বাগ হয়। সে যামিনীকে বলে, কী শুনছি। খুডো ? ছেলের নিন্দে কেন ? কার নিন্দে শশীব ? যামিনী আশ্চর্য হইয়া যায়, আমি শশীর নিন্দে করব! এ কথা তোর বিশ্বাস হয় গোপাল ? ঘরে নিন্দে কব, আমাব কাছে নিন্দে কব, কথা নেই। কিন্তু খববদার, বাইবে যেন নিন্দে কোবো नी श्रृंgीं। কিন্তু যামিনী নিজেকে সামলাইতে পারে না। তাহার অসহ্য জ্বালা। সে ফের শশীর নিন্দা করিয়া বসে। বলে, গা-টাকে ও ছোড়া উচ্ছন্ন দেবে। ছোড়ার চুল ছাঁটাবি কায়দা দেখেছিস! মাঝে মাঝে শশীকেও সে অপমান করে, শশী গায়ে মাখে না। আগে শশী কারও অপমান সহ্য করিত না, আজকাল তাহাব এক প্রকার অদ্ভুত ধৈৰ্য আসিয়াছে। যামিনীর কথায় তাহার একেবারেই রাগ হয় না। সেনদিদিব অসুখ উপলক্ষে ওর যে পরিচয। সে পাইয়াছে তাহাতে বুঝিতে তাহার বাকি থাকে নাই যে, সংসারে বদ্ধ পাগল ছাড়াও কম বেশি অনেক পাগল আছে : এক এক বিষয়ে মাথায় যাহাঁদের অত্যাশ্চর্য বিকার থাকে। যামিনীও তাদেরই একজন। ওর অর্থহীন অপমানে রাগ করিলে নিজেও সে এমনি পাগলোব দলে গিয়া পড়িবে। তাছাড়া, আর একদিক দিয়া শশীর মন শান্ত হইয়া স্থিতিলাভ করিয়াছিল। তাহার ইনটেলেকচুয়াল রোমান্সের পিপাসা। যাহা চায়ের ধোঁয়ার মতো, জলীয় বাষ্প ছাড়া আর কিছু নয়, চা-ও নয়। জীবনকে দেখিতে শিখিয়া, অত্যন্ত অসম্পূর্ণ ভাসা-ভাসা ভাবে জীবনকে দেখিতে শিখিয়া, সে অবাক হইয়া দেখিয়াছে যে এইখানে, এই ডোবা আর জঙ্গল আর মশা ভরা গ্রামে জীবন কম গভীর নয়, কম জটিল নয়। একান্ত অনিচ্ছার সঙ্গে গ্রামে ডাক্তারি শুরু করিয়া ক্ৰমে ক্ৰমে এ জীবন শশীর যে ভালো লাগিতেছে, ইহাই তাহার প্রথম ও প্রধান কারণ। তারপর যাত্ৰাদলের অভিনেতা সাজিয়া কুমুদের আবির্ভাব। মোনালিসার কুমুদ, ভেনাস ও কিউপিন্ডের কুমুদ, শেলি বায়রন হুইটম্যানের কুমুদ, পেগ খাওয়া walty foxtrol নােচা, কুমুদ, নীলাক্ষীর প্রেমিক কুমুদ, তার চেয়ে বয়সে জ্ঞান বিদ্যায় বুদ্ধিতে