পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in VISOS O মানিক রচনাসমগ্ৰ হয়তো সে ভাবিয়ছিল। কলিকাতায় পা দেওয়া মাত্ৰ কুমুদের দেখা মিলিবে,--তাকে শহরে অভ্যর্থনা করিয়া লইবে রাজপুত্র প্রবীর! পথে একবার সে জিজ্ঞাসা করিল, কলকাতায় আমরা কোথায় থাকব ছোটোবাবু? আপনার সেই বন্ধুর বাড়িতে ? শশী বলিল, খুব তাহলে যাত্রা শুনতে পারিস, না? যাত্রা শুনবার লোভে তুই কলকাতায় চলেছিস নাকি মতি ? থিয়েটার দেখিস একদিন, দেখাব তোদের-যাত্রার চেয়ে সে ঢের ভালো। পাঁচদিন তাহারা কলিকাতায় রহিল। যা কিছু দেখার ছিল শহরে দেখিয়া বেড়াইল। স্নান কবিল গঙ্গায়, পূজা দিল কালীঘাটে, ট্রামে চাপিয়া অকারণে ঘোরা-ফেরা করিল। কিন্তু কোথায় মতির রাজপুত্ৰ প্রবীর ? শশীর সে বন্ধু, এই শহরের কোথাও সে বাস করে। কিন্তু শশী একবার না করিল। তার নাম, না আনিল তাকে ডাকিয়া। শহরের অফুরন্ত বিস্ময় অভিভূত করিয়া না বাখিলে মতির দুচোখ ভরিয়া হয়তো জল আসিত। শিয়ালদহের কাছে একটা হােটেলে তাহারা দুখানা ঘর ভাড়া করিয়াছে, -একটা ঘর শশীর একার। একদিন শশী তার এক ডাক্তার বন্ধুর বাড়ি রাত কাটাইযা আসিল। রাত্রে উকি দিয়া তার ঘর খালি দেখিয়া মতি ভাবিল শশী। তবে নিশ্চয় কুমুদেব কাছে গিয়াছে,--সকলে দুজনে একসঙ্গে আসিবে। কুমুদ ছাড়া জগতে শশীর আর কোনো বন্ধু আছে বলিয়া মতি জানে না। ওঠানামা চাহিয়া দেখিল, কিন্তু শশী অথবা কুমুদ কেহই আসিল না। পরানের সঙ্গে সেদিন তাদেব যাদুঘরে যাওয়ার কথা,-সিকাল সকাল খাওয়া-দাওয়া সারিয়া বাহির হওয়া দরকার,-মতি নড়িতে চায় না। ছোটােবাবু আসুক ? ছোটােবাবু এ বেলা আসবে না মতি, এলে এতক্ষণ আসত। ও বেলা যাদুঘর যাব দাদা, অ্যা? এ বেলা বডড শীত। পরানের চাদরটা গায়ে জড়াইয়া মতি ঠির ঠির করিয়া শীতে কঁপে। কুসুম বলে, মীর তুই আহুদি মেয়ে! ছোটােবাবু আজ মোটবগাড়ি চাপাবে না লো, পিত্যেশ করে থেকে কারবি কি ? দেরি হল বলে মোটর এল সেদিন, মোটবে ঢের পযসা লাগে। নাইবি তো নেয়ে ফ্যাল মতি, নয়তো ভাত দিয়েছি। খাবি আয়। বসিয়া শশী চা খাইতেছে, —একা, কুমুদ নিশ্চয আসিয়াছিল, বসিয়া বসিয়া বিরক্ত হইয়া চলিয়া গিয়াছে। মতি সািভয়ে জিজ্ঞাসা করিল, কখন এলেন ছোটোবাবু ? শশী বলিল, এই তো এলাম খানিক আগে । কোথা গিয়েছিলি,--যাদুঘব ? কাল কিন্তু শেষ দিন মতি, পরশু আমরা ফিরে যাব। মতির তাতে আপত্তি নাই। আর কলিকাতায় থাকিয়া কী হইবে ? পরদিন সন্ধ্যার সময় শশী বিন্দুর খবর আনিতে গেল। নন্দ থাকিলে রাগ করবে, হয়তো অপমানও করিবে। করুক। সে জন্য বোনটা বঁচিয়া আছে কি না এটুকু না জানিয়া বাড়ি ফেরা যায় না। গোপালের খেয়ালে জীবনে যারা দুঃখ পাইয়াছে তাদের জন্য শশীর মনে একটা অতিরিক্ত মমতা আছে। গোপালের কীর্তিতে নিজেকেও সে কেমন অপরাধী মনে করে। মনে হয়, তারও যেন प्रशेिड् छ्ळुिन !