পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা 8ᏔᎼ S বড়োলোকের ছেলে ছিলেন বোধ হয়। ওয়ারিশ থাকলে খবর পেয়ে তারা বোধ হয় গোলমাল করবে। শশী, মামলা-মকদ্দমা না করে। ছাড়বে না। সহজে। তুই না বিপদে পড়িস শেষে। আমার কীসের বিপদ ? আমাকে তো দেননি। টাকা! এ সব উইল সহজে ওলটায় না। গোপাল অকাবণে গলা নিচু করিয়া বলিল, কারও কাছে হিসাব নিকাশ দিতে হবে না তোকে ? শশী বলিল, টাকা পয়সার ব্যাপার, হিসাব নিকাশ থাকবে না? তবে আমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে না। কারও কাছে। আমার খুশিমতো তিনজন ভদ্রলোককে বেছে নিয়ে কমিটি করব, তঁরা শুধু আমাকে পরামর্শ দেবেন।---সব বিষয়ে কর্তৃত্ব থাকবে আমার। এত খাটবি খুটিবি, তুই কিছু পাবি না। শশী ? হাসপাতালের ডাক্তার হিসাবে ইচ্ছা করলে কিছু মাইনে নিতে পারব। সমস্ত রাত ভাবিয়া পরদিন গোপাল বলিল, দ্যাখ শশী, তুই ছেলেমানুষ, এ সব গোলমেলে ব্যাপারে তোর থেকে কােজ নেই,-—-এ সব নিয়ে থাকলে ডাক্তারি করবি কখন ? হাওগামা তো সহজ নয়। তার চেয়ে আমার হাতে ছেড়ে দে সব, আমি সব ব্যবস্থা করব। গায়ে হাসপাতাল হবে, এত সব বয়স্ক বিচক্ষণ লোক থাকতে সব ব্যাপারে ছেলেমানুষ তুই তোর কর্তৃত্ব থাকলে সকলে চটে যাবে শশী, শত্ৰুতা কবে সব পণ্ড করে দেবে। তুই সরে দাঁড়া। শশী বলিল, তা হয় না। হয় না? কেন হয় না শুনি ? তুই বুঝি অবিশ্বাস করিস আমাকে? শশী এবার বিরক্ত হইয়া বলিল, অবিশ্বাসের কথা কোথা থেকে আসে? আর কারোকে ভার দেবার অধিকার আমার নেই। আমি দায়িত্ব না নিলে গভর্নমেন্টের হাতে চলে যাবে। গোপাল বোধ হয কথাটা বিশ্বাস করিল না। পাবদিন সে চলিয়া গেল বাজিতপুর। ফিরিয়া আসিয়া বলিল, উইলটা দেখে এলাম শশী। সব দায়িত্ব তোকে নিতে হবে কিন্তু কাজের কনট্রকেট তুই যাকে খুশি দিতে পাব্যিস, তাতে কোনো বাধা নেই। তাই দে আমাকে। এজেন্ট করে নে আমায়। শশী বলিল, কোথাও কিছু নেই আগে থেকে আপনি এত ব্যস্ত হয়ে পড়লেন কেন ? গোপাল বলিল, ব্যস্ত কী হই সাধোপ তুই ছেলেমানুষ, কী করতে কী করে বসবি--- আপনার সঙ্গে পরামর্শ করেই করব । একজন সৎকাজে যথাসর্বস্ব দান করি যা গিয়াছে, আর একজন তাতে কিছু ভাগ বসাইতে চায। কিছু ভালো লাগে না। শশীর । অসংখ্য দুর্ভাবনা ঘনাইয়া আসে। এদিকে অবিশ্রাম বর্ষা নামিয়াছে। তাও অসহ্য। গ্রাম। কী শ্ৰীহীন কদৰ্য প্রকৃতির এই লীলাভুমি? বর্ষার নির্মল বারিপাতে গলিয়া হইল পাক, পচিয়া হইল দুগন্ধ। পালানোব দিন আরও কতকাল পিছইয়া গেল কে জানে। কুসুম ফিরিবার আগে গ্রাম ছাডিতে পারিলে হইত। আর সে উপায় নাই। দেশে এত গণ্যমান্য লোক থাকিতে যাদব শেষে এমন বিপদে ফেলিযা গেলেন তাহাকেই! যাদবের মহা-মৃত্যুর উত্তেজনা এখনও কাটিয়া যায় নাই, উইলের খবরটা প্রকাশ পাওয়া মাত্র আর একদফা উত্তেজনার প্রবাহ বহিয়া গেল। শীতলবাবু শশীকে ডাকিয়া সব শুনিলেন, বলিলেন, পণ্ডিতমশাই বলে এবং তিনি স্বগীয় বলে শশী, নইলে আমি থাকতে আমার গাঁয়ে আমাকে ডিঙিয়ে হাসপাতাল দেবার স্পর্ধা কখনও সইতাম না। তা শোনো, তোমার ফন্ডে আমি হাজার টাকা ॉनों (नत। শশীর ফন্ড। টাকাগুলি যাদব যেন শশীর কল্যাণেই দান করিয়া গিয়াছেন। গ্রামের মানাবরেরাও সদলে শশীর কাছে যাতায়াত শুরু করিলেন। শীতলবাবুর মতো মনে সকলের আঘাত লাগিয়াছে! এত