পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা 8(፩ (፩ বলছিলে, কাল যদি ওব সঙ্গে আমার চিরবিচ্ছেদ হয় দুদিনে সামলে উঠিব। মতিকে দিয়ে আমি পা টেপাই জীয়া! পা টেপাও? বেশ কর। অদ্ভুত, খাপছাড়া কিছু না করলে তুমি বঁচবে কেন? আমি যদি মতি হতাম।-- অনা কিছু করতে,—অদ্ভুত, খাপছাড়া। বঁাচার আনন্দটাই যে খাপছাড়া জয়া, খাপছাড়া কিছু না مسسته জয়া বলিল, হঁ্যা। ও সব জানি। আর কিন্তু বক্তৃতা দিও না কুমুদ। ও বেলা বাড়ি দেখে এসে কাল তোমরা চলে যাও। চোখের সামনে তোমাবা ভালোবাসবে আমি তা সইতে পারব না। চোখের আড়ালেও পারবে না। সে আলাদা কথা । বলিয়া জযা যেন হঠাৎ আশ্চর্য হইয়া গেল।--কী ভাবলে তুমি ? কী ভেবে ও কথা বললে ? তুমি নিশ্চয় জানো কুমুদ, ও ভাবে আমাকে তুমি কোনোদিন টানতে পারনি? ও রকম আকর্ষণ আমার কাছে তোমার কোনোদিন ছিল না ? কুমুদ একটু অপ্রতিভ হইয়া বলিল, তা জানি। সে রকম ইঙ্গিত করিনি জয়া। আমরা এসে তোমার ঘর ভেঙে দিয়ে গেলাম, তাই বলছিলাম চলে গেলেও আমাদের স্মৃতি তোমার অসহ্য ঠেকবে। জয়া ক্ষীণভাবে একটু হাসিয়া বলিল, কী চমৎকার তুমি বলতে পার কুমুদ।-ও মতি, আয ঘরে আয়। শোনা যত পারিস, এ সব কথা তুই বুঝবি না। আমরা একেলে-ধরা মানুষ, কত হেঁযালিই করি। আবার বাড়ি বদলের হাঙ্গামা ? জয়া তাদের এখানে তাকিতে দিবে না ? না দিক। ভালোই। নতুন বাড়িতে তাবা সুখেই থাকিবে। বাগে মতি মুখ বার কবিয়া থাকে। কীসে কী হইল বেচারি এখনও তা বুঝিতে পারে নাই, কুমুদের ব্যাখ্যা করার পরেও নয়। জয়াকে সে শোনায়, কী অপরাধ করেছিলাম বাবা তোমার কাছে তুমিই জানো, ভালো করলে না দিদি, তাড়িয়ে দিলে ভালো করলে না। মনে রাখব। বলব সবাইকে । दी दक्लित्रि? তুমি কী বকম ভীষণ মানুষ তাই বলব, তোমার মনে এক, মুখে আর । কত ভালোবাসাই দেখাতে! গেল কোথায় সে সব ? আমিও শক্ত মেয়ে আছি, নামটি যদি মুখে আনি তো মুখে যেন পোকা পড়ে। নাম মুখে না আনলে সবাইকে বলবি কী করে ? মতি কঁাদোর্কাদো হইয়া যায়। আর কথা বলে না। বনবিহাবী বিকালেই ফিরিযা আসিয়াছিল, গম্ভীর বিষন্ন বনবিহারী। মতি দেখিল সকালবেলার কাণ্ডে ওদের কথাবার্তা বন্ধ হয় নাই। বনবিহারী খাওয়া-দাওয়াও করিল, জয়াকে কয়েকটা টাকাও দিল। তবে দুজনের মধ্যে যেন অপরিচয়ের ব্যবধান আসিয়াছে, বড়ো মন-মরা দুজনে। কোথায় বাসা ঠিক করিয়া সন্ধার সময় কুমুদ ফিরিয়া আসিল। মতি বলিল, থিয়েটারে যাবে না। আজ? কুমুদ বলিল, না। পরদিন সকালে গাড়ি ডাকিয়া জিনিসপত্র তোলা হইল। জয়া কেবল একবার বলিল যে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করিয়া গেলে ভালো হইত না ? বনবিহারী কিছুই বলিল না। জয়ার কাছে বিদায় না। লইয়াই মতি গটগট করিয়া গাড়িতে উঠিয়া বসিল। কুমুদের সঙ্গে কথা বলিতে বলিতে জয়া আসিয়া দাঁড়াইল দরজায়।