পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in গ্ৰন্থপরিচয় Ο δ δ উপন্যাসটির পূর্ব-উদ্ধৃত ভূমিক-ধরনের লেখাটি ঔপন্যাসিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে-ওঠার ও মানিকের শিল্পজিজ্ঞাসাব বিশিষ্টতাকে আভাসিত করেছে। লেখকের জীবদ্দশায প্রকাশিত শেষ সংস্করণটির (ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড পাবলিশিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড প্রকাশিত, ৭ অগ্রহায়ণ ১৩৬১ বঙ্গাব্দ) দ্বিতীয় মুদ্রণে (শ্রাবণ, ১৩৬৬)। উক্ত ভূমিকার অনুচ্ছেদ দুটি অজ্ঞাতকারণে বর্জিত হয়েছে। বঙ্গশ্ৰী পত্রিকায় প্রকাশকালে ছিল না এবং পরবতী আব্ব-কোনো সংস্করণে নেই। অথচ শুধু ডি এম সংস্কবণেই আছে উপন্যাসটির বিস্তারিত নামকরণ—"দিলারাত্রির কাব্য : একটি বস্তুসঙ্কেতের কল্পনামূলক বৃপক কাহিনী. . ' উপন্যাসটির বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলীর একান্ত নিজস্ব অভিনবত্ব ঘোষণার জন্যই হয়তো মানিক এই বিচিত্র পন্থাটি গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৩৫-এর ডিসেম্বরে দিবারাত্রিব কাব্য প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। বস্তৃত রচনাকালের দিক থেকে দিবারাত্রির কাব্য-ই মানিকের প্রথম উপন্যাস। কিন্তু প্ৰকাশকালের দিক থেকে দিবারাত্রির কাব্য মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় গ্ৰন্থ, দ্বিতীয় উপন্যাস। ধারাবাহিকভাবে বঙ্গশ্ৰী পত্রিকায় প্রকাশিত উপন্যাসটির আদি পাণ্ডুলিপি” ‘অনেক পরিবর্তন’- এর আগে কোন চেহাবায় ছিল, তা জানা যায় ১৯৭৬ সালে এক্ষণ পত্রিকার দ্বাদশ বর্ষ প্রথম ও দ্বিতীয সংখ্যায় প্রকাশিত যুগান্তর চক্ৰবতী সম্পাদিত “দিবা।বাত্রিব কাব্য ; আদি পাণ্ডুলিপি” থেকে। দিবারাত্রিব কাব্যের সেই আদি পাণ্ডুলিপি যুগান্তর চক্ৰবতীর সৌজন্যে পরিশিষ্টরূপে মুদ্রিত হল। ডি এম সংস্করণে উপন্যাসটির প্রত্যেকটি ভাগেবই কাহিনি-অংশ আরম্ভের আগের পৃষ্ঠায় নিম্নোক্ত উপস্থাপনায় সুবিন্যস্ত প্রথম ভাগ/দিনের কবিতা, দ্বিতীয় ভাগ/বাতের কবিতা, তৃতীয় ভাগ/দিবারাত্রিব কাব্য। পত্রিকায় কোথাও কোনো কবিতা ছিল না। কিন্তু ডি এম সংস্কবণ থেকে তিনটি ভাগেবই কাহিনিঅংশের আরম্ভেব পূর্ববর্তী পৃষ্ঠায় একটি করে কবিতা সংযুক্ত হয়েছে এবং পবিবর্তীকালেও সেইগুলি বক্ষিত হয়েছে। বঙ্গশ্ৰীতে প্রকাশিত পাঠের তুলনায় ডি এম সংস্করণেব পাঠে একটি-দুটি শব্দ ছাড়াও কোথাও কোথাও দুটি-একটি বাক্য ও বাক্যাংশের যোগ ও বিয়োগসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিন্যাসগত ঈষৎ পার্থক্য বিদ্যমান। এক বা একাধিক বাক্যাংশ, কোথাও কোথাও দুটি-তিনটি বাক্য এবং কথোপকথন ও বর্ণনা ংশের কিঞ্চিৎ বিন্যাসগত পার্থক্য উপন্যাসের সামগ্রিক মেজাজ ও আবেদনকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত করতে না পারলেও আদি পাণ্ডুলিপি ও বঙ্গশ্ৰীীর মুদ্রিত পাঠের তুলনায় ডি এম সংস্করণ ও ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রকাশিত সংস্করণ ও তার দ্বিতীয় মুদ্রণের উপসংহার-অংশগুলির মেজাজ ও আবেদনগত পার্থক্যকে উল্লেখযোগ, মৌলিক পার্থক্য বলেই মনে করার অবকাশ আছে। আদি পাণ্ডুলিপির উপসংহার-অংশের সঙ্গে বঙ্গশ্ৰীর উপসংহার অংশের পার্থক্য মূলত খুব বেশি নয়, কেন না দুটি ক্ষেত্রে সমুদ্রস্নান এবং সমুদ্রগর্ভেই আনন্দর আত্মসমৰ্পণ লক্ষণীয়। কিন্তু ডি এম সংস্করণ এবং ১৩৬২ বঙ্গাব্দের ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড সংস্করণ ও দ্বিতীয় মুদ্রণ মেজাজ ও আবেদনের দিক থেকে ভিন্নতর। বস্তুত শেষোক্ত দুটি উপসংহারেই আনন্দ আগুনের লেলিহান শিখাকেই চিতাসজ্জায় পরিবর্তিত করেছে।