পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in GłVON মানিক রচনাসমগ্ৰ হেব্বস্ব ক্ষুব্ধ হইয়া বলিল, “আপনি ও কথা লিখতে গেলেন কেন?” ‘তাতে কি ! ওরা মনে করবে পোষ্টাপিসের কেরানী ভুল করেছে।” “সেজন্য নয়। দিদির সঙ্গে আমি জুয়াচুরি কবি না।” ‘অন্যসকলের সঙ্গে করেন ?” গাড়ী বাড়ী নয় বলিয়া সরসী বেশ কথা কহিতেছে। বুপাইকুড়ায় সে কি এমনভাবে আলাপ করিতে পারিও ? তাহাদেব সম্পর্ক হযত এতদিনে ওর মনের মধ্যে সহজ হইয়া আসিয়াছে। প্ৰেমালাপে। তাই এত বাস্তবতার আমদানী । ° yYRe কে যেন আঁচল ধবিদ্যা টানিয়া বাখিতে চায়। সে অশোকের মুখেব দিকে তাকাইবে। অশোক ঘুমাইযা আছে। কি সুন্দর ওব ঘুমন্ত মুখখানি ও তাব স্বামী, ও তারা সৰ্ব্বস্ব। চাহিয়া থাকিতে থাকিতে সরসী দুই হাতে বুক চাপিধ্যা ধরিয়াছে, বুকে তাব অসহ্য যন্ত্রণা হইতেছে। সরাসী গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন দিতেছে, সরসী স্বামীর সঙেগ সহমরণে যাইতেছে, আজি সবসীৰ জহবব্রতে্যুব সূচনা। কঁাপিতে কঁাপিতে সরসী তাহাব ঘবে আসিয়া কঁদিতে কঁাদিতে সেমিজ খুলিবে। অশোকের বাউীতে থাকিয়া তাব বীেকে কঁদানো চলে না। শুনি যা সবসী কঁদিবােব উপক্ৰম কবিয বলিল, “কেন, থাকবেন না কেন ?” ‘शांकों कि ठठि १' ‘উচিত তো সবই । কি করে কি হবে তা হলে ?” হেরম্ব তাহাকে আশ্বাস দিয়া কহিল, “বাড়ীতে অতিথি হওয়া ছাড়া আপনি যা বলবেন আমি তাই কবব।” চোখের জলের মধ্যে সরাসী হাসিল। বাড়ী পৌঁছিযা তাহাবা দেখিল অশোকের জুব শুয়ানক বাডিয়া গিােযাছে। তবে চোখ ভাবি লাল, সে ছটফট করিতেছে। জ্বরেব ঘোবে সে বোধ হয় নাকের নীচেব ব্রণটা চুলকাইয়াছিল, চিবুক পৰ্যন্ত একটি বক্তের বেখা শুকাইয! আছে | সরসী যেন আধমবা হইযা গেল। একমুহূৰ্ত্তে তাঁর মুখ শুকাইয়া এতটুকু হইয়া গিযাছে, তাব যেন দাঁডইবাব ক্ষমতা নাই। ‘ওগো, তোমাব কি হল গোপ’ বলিয়া সে ধাপ করিয়া বিছানায় বসিয়া পড়িল,”তোমায যে ভাল দেখে আমি মন্দিবে গিয়েছিলাম।” আহা, দুঃখী মেয়েটিব বকম দেখিলে চোখে জল আসে। এই কপালে বুকে হাত দিয়া জুব দেখিযা শিহবিদ্যা উঠিতেছে, এই নিজেব পরিচয় দিযা ব্যাকুলভাবে স্বামীকে ডাকিতেছে, পরীক্ষণে হতাশভাবে মাথা নাড়িযা বলিতেছে, “পোডাকপালীকে উনি আর চিনবেন না গো, চিনবেন না প” তারপর বাগিয়া বলিতেছে--- “এখনো ডাক্তাব এল না ? কি কারচেন। আপনাবা!” বলিয়া অশ্রশ্নবিত মুখ তুলিয়া হেবম্বের দিকে চাহিয়া দাঁত দিয়া ঠোঁট কামড়াইয়া ধরিতেছে। হেবম্ব বিশ্ৰী মুখভঙ্গি করিয়া বলিতেছে, ‘আসছে। ডাক্তাব-আসছে।’ [ একাদশ পরিচ্ছেদ শেষ হতে আর একটি পৃষ্ঠাই বাকি ছিল। পৃ ১২১-১৩৬ স্বাদশ পরিচ্ছেদ অশোক না হয় মরিবে, তাই বলিয়া প্রেমিককে আমন মরণাধিক অপমান সরাসী কি বলিয়া করিল ? হেরম্ব ভালবাসে না বলিয়া রক্ষা, ভালবাসিলে এ আঘাত কি সামলাইতে পারিত ? সরাসী আমন বুদ্ধিমতী মেয়ে হইয়া এ কবিল কী? একটি সন্ধ্যায় সরসী যে তার অচেনা লক্ষ লক্ষ সাধারণ মেয়ের ভিড়ে হারাইয়া গেল। ইহার উপায় সরাসী কি কবিবে? আজ তিনদিন হেরম্ব আনন্দের মায়ায় আচ্ছন্ন হইয়া আছে, তার অঙ্গ অবসন্ন, মন নিরুৎসাহ, সাংবাদিন তার হাই তোলা আর আলস্য। আনন্দ বেড়াইতে যাইতে চায়, হেরম্বকে কাকুতিমিনতি কলে, কিন্তু বাহিরের পৃথিবীর ও পার্থিব জনতাব সংস্পর্শে নেশা টুটিয়া যাইবার ভয়ে হেরম্ব ঘব ছাড়িয়া নড়ে না।