পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানিনী।
১৩

অন্তরের কথা গোপন রাখিতে পারি না। আপনি আমার বিবাহের চেষ্টা আর করিবেন না। কারণ, বিবাহ হইতে আমার বাকী নাই; প্রায় এক বৎসরের অধিক হইল, আমার বিবাহ হইয়া গিয়াছে। বিবাহের পর যে পর্য্যন্ত আমি তাঁহাকে সাহায্য করিতে সমর্থ না হইয়াছিলাম, সেই পর্য্যন্ত আমার স্ত্রী আমার জনৈক বন্ধুর দ্বারা প্রতিপালিত হন। কিন্তু যে পর্য্যন্ত আমার চাকরী হইয়াছে, সেই পর্য্যন্ত আমি আমার বেতন হইতে তাহার খরচপত্র নির্ব্বাহ করিয়া আসিতেছি, এবং যাহাতে তিনি আরও একটু লেখা-পড়া ভাল করিয়া শিখিতে পারেন, তাহার নিমিত্ত এখন আমি তাঁহাকে একটী স্কুলে রাখিয়া দিয়াছি। সেইস্থানে তিনি রাত্রি দিবস অবস্থিতি করিয়া লেখা-পড়া শিক্ষা করিতেছেন। এখন যেরূপ আপনার বিবেচনা হয়, সেইরূপ আপনি করিতে পারেন। যদি আপনি তাঁহাকে আনিয়া বাড়ীতে রাখেন, তাহাতে আমার কোন আপত্তি নাই। তিনি এখন লেখাপড়া শিখিয়াছেন, নিজের ভালমন্দ তিনি এখন নিজে বেশ বুঝিয়াছেন। সুতরাং আমার বিবেচনা হয়, বাড়ীতে আসিয়া বাস করিতে তাঁহার কোন আপত্তি হইবে না। এরূপ অবস্থায় আপনি যাহা ভাল বিবেচনা করিবেন, তাহাই হইবে। একত্র বাস করিলে খরচ-পত্রের অনেক সুবিধা হইবার সম্ভাবনা। এরূপ অবস্থায় আমার বোধ হয়, সকলে মিলিয়া একত্র বাস করা কর্ত্তব্য। বিশেষতঃ যাহাকে বিবাহ করিয়াছি, তাঁহাকে অন্য স্থানে রাখিয়া আমার অন্য স্থানে থাকা কোনরূপেই কর্ত্তব্য নহে। আপনার আদেশ পাইলেই স্কুল হইতে আমি আমার স্ত্রীকে বাড়ীতে আনয়ন করিব। ইতি:—”