পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানিনী।
১৯

এই ভয়ে মানিনী উহা স্পর্শও করিলেন না। একখানি গাড়ী অনাইয়া তৎক্ষণাৎ তিনি তাহার কোন বন্ধুর বাড়ীতে গমন করিয়া আহারাদি করিলেন; এবং যে পর্য্যন্ত রাজকিশোরী আরোগ্য না হইবেন, সেই পর্য্যন্ত তিনি তাঁহার সেই শিক্ষিত বন্ধুর বাড়ীতেই অবস্থিতি করিবেন, ইহাই স্থির করিলেন। শিক্ষিত বন্ধুর অর্থের অনাটন ছিল না, সুতরাং তিনি শিক্ষিতা মানিনীকে তাঁহার থাকিবার স্থান প্রদান করিতে অসমর্থ হইলেন না। মধ্যে মধ্যে বিপিনও সেইস্থানে গমন করিয়া আহারাদি করিতে লাগিলেন। মানিনী তাঁহার শিক্ষিত বন্ধুর শিক্ষিতা স্ত্রী ও শিক্ষিতা কন্যার সহিত আহার বিহার করিয়া মনের সুখে কাল কাটাইতে লাগিলেন, এবং সভা-সমিতি প্রভৃতি স্থানে ইচ্ছামত গমনাগমন করিতে লাগিলেন।

 পাঠকগণ পূর্ব্ব হইতেই অবগত আছেন যে, বিপিনের মাসিক আয় ৬০ টাকা। যত দিবস পর্য্যন্ত মানিনী, রাজকিশোরী বা রজনীকান্তের সহিত একত্র বাস করিতেছিলেন, সেই পর্য্যন্ত বিপিন আপনার বেতন হইতে ২৫ টাকা সংসারের খরচের নিমিত্ত প্রদান করিতেন। অপর ৩৫ টাকা দ্বারা তিনি তাঁহার শিক্ষিত বনিতার ফরমাইস্ সকল কষ্টে নির্ব্বাহ করিতেন।

 যে দিবস হইতে রাজকিশোরী অসুস্থ হইয়া পড়িলেন, বা যে দিবস হইতে মানিনী আপনার বন্ধুর বাড়ীতে বাস করিতে লাগিলেন, সেই দিবস হইতে বিপিন সাংসারিক খরচও বন্ধ করিয়া দিলেন। এই কার্য্য বিপিন নিজের ইচ্ছামত করিলেন, কি তাহার শিক্ষিতা বনিতার পরামর্শ মত বাধ্য হইয়া করিলেন, তাহা লেখক অবগত নহেন। সে বিষয়ের বিচারের ভার পাঠকগণের উপর রহিল।