পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানিনী।
২৩

 এইরূপ নানাকারণে ক্রমে বিপিনচন্দ্র ঋণজালে বিশেষরূপে জ্বালাতন হইয়া পড়িলেন। অথচ পূর্ব্ববর্ণিত নিতান্ত প্রয়োজনীয় খরচের মধ্য হইতে যে কোন একটী খরচ কমাইতে পারেন, তাহারও কোন উপায় দেখিলেন না।

 ডাক্তার বাবু, মানিনী ও বিপিনকে অশেষ ভালবাসিতেন; সুতরাং মধ্যে মধ্যে তিনি বিশেষরূপে অর্থ সাহায্য করিতেও ত্রুটী করিতেন না। তথাপি বিপিন আপনাদিগের খরচ-পত্র কোনরূপেই সুচারুরূপে নির্ব্বাহ করিয়া উঠিতে পারিতেন না।

 ক্রমেই মাসে মাসে ঋণের সংখ্যা বৃদ্ধি হইতে লাগিল। উত্তমর্ণগণ ক্রমে তাগাদা আরম্ভ করিলেন; কিন্তু বিপিন তাঁহাদিগের ঋণ কোনরূপেই পরিশোধ করিতে পারিলেন না। মাসে মাসে হ্রাস হওয়া দূরের কথা—ক্রমে বৃদ্ধিই পাইতে লাগিল।

 উত্তমর্ণগণ এই রূপে যখন কিছুতেই আপন আপন প্রাপ্য টাকা আদায়ের কোনরূপ উপায় করিতে পারিলেন না, তখন অনন্যোপায় হইয়া ক্রমে ক্রমে সকলেই আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করিতে লাগিলেন। আর ডিক্রী করিয়া কেহ বা তাঁহার তৈজসপত্র বিক্রয় করিয়া লইতে লাগিলেন, কেহ বা তাঁহার বেতনের টাকা ক্রোক দিয়া বসিলেন। এইরূপে একের টাকা পরিশোধ হইতে না হইতে অপর ব্যক্তি তাঁহার বেতন ক্রোক করিতে লাগিলেন।

 এই সকল অবস্থা দেখিয়া বিপিনের মনিব সাহেব তাঁহার উপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হইয়া পড়িলেন, এবং পরিশেষে বিনাবেতনে বিপিনকে ছুটী দিয়া কহিলেন, “যে পর্য্যন্ত তুমি তোমার সমস্ত দেনা পরিষ্কার করিতে না পারিবে, সেই পর্য্যন্ত তুমি চাকরী পাইবে না। সমস্ত দেনা পরিশোধ করিয়া উঠিতে পার, তবে চাকরীর নিমিত্ত