পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

 এখন আর বিপিনের স্থান নাই। যাঁহাদিগকে বন্ধু বলিয়া তাঁহার মনে বিশ্বাস ছিল, এখন আর তাঁহারা তাঁহাকে আপন বাড়ীতে স্থান প্রদান করেন না। অথচ বিনাদোষে যে ভ্রাতাকে পরিত্যাগ করিয়া আসিয়াছেন, সামান্য পরিমাণ অর্থ দিয়া যাহার বিপদের সময় সাহায্য করিতে উপেক্ষা করিয়াছেন, আজ কি প্রকারে সেই ভ্রাতার নিকট গমন করিবেন, এবং সেই রাজকিশোরীকে কিরূপে আপন মুখ দেখাইবেন?

 যে ভ্রাতার সহিত নিতান্ত অসদ্ব্যবহার করিয়া বিপিন আপন স্ত্রীকে লইয়া চলিয়া আসিয়াছিলেন, নিতান্ত অনন্যোপায় হইয়া পুনরায় তাঁহাকে সেই ভ্রাতার নিকট গমন করিতে হইল। যে সময় বিপিন ভ্রাতার বাড়ীতে গমন করিলেন, সেই সময় রজনীকান্ত বাড়ীতে ছিলেন না, কার্য্যবশত স্থানান্তরে গমন করিয়াছিলেন। অশিক্ষিতা রাজকুমারী অতীব যত্নের সহিত আপন বাড়ীতে বিপিনের স্থান করিয়া দিলেন। বিপিন সেইস্থানে অবস্থান পূর্ব্বক আপনার শিক্ষিতা বনিতার অনুসন্ধান করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন।

 এইরূপে প্রায় এক মাসাধিক কাল অতীত হইয়া গেল, কিন্তু বিপিন তাঁহার শিক্ষিতা বনিতা মানিনীর কোনরূপ সন্ধান করিয়া উঠিতে পারিলেন না। অথচ তাঁহার আশাকে হৃদয় হইতে একবারে দূরীভূত করিতে পারিলেন না। বিপিনের দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে, মানিনী প্রাণের সহিত তাহাকে ভালবাসেন, সুতরাং অবিশ্বাসিনীর কার্য্য তাঁহার দ্বারা কখনই হইতে পারে না। তা’ই মনে করিলেন যে, কোনরূপ বিপদে পতিতা