পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

অনুগত হইয়াছিলাম। কোন অশিক্ষিতা স্ত্রীলোক হইলে দেখ্‌তিস, তিন দিবসের মধ্যে তোকে পরিত্যাগ করিয়া কোথায় চলিয়া যাইত। কিন্তু আমি ততদূর করি নাই, আমার ধর্ম আমি রাখিয়াছি। সবিশেষ কষ্টে পড়িয়াও একাদিক্রমে কয়েক বৎসর তোর সহবাসে কাল কাটাইয়াছি। প্রথম হইতে যদি আমি বুঝিতে পারিতাম যে, আমার খরচ পত্রের সংস্থান করিবার ক্ষমতা তোর নাই, তাহা হইলে এত সময় আমি কখন কি নষ্ট করিতাম? না তোর নিকট থাকিয়া এত কষ্ট অনুভব করিতাম? এখন তোকে বলিতেছি, তুই আমার সম্মুখ হইতে প্রস্থান কর, এবং আমার আশা পরিত্যাগ করিয়া কোন অশিক্ষিত স্ত্রীলোকের চেষ্টা দেখ্‌।”

 এই বলিয়া গাড়ীর যে পার্শ্বে বিপিন দণ্ডায়মান ছিল, তাহার বিপরীত পার্শ্ব দিয়া আপনার গলা বাহির করিয়া গাড়িবানকে গাড়ী হাঁকাইতে কহিল। আদেশ পাইবামাত্র গাড়িবান বিপিনকে পশ্চাদপদ হইতে কহিয়া আপনার গাড়ী হাঁকাইয়া দিল। কোনরূপে আপনার পা বাঁচাইয়া বিপিনও গাড়ীর পশ্চাৎ পশ্চাৎ “একটু দাঁড়াও একটু দাঁড়াও” বলিতে বলিতে গমন করিতে লাগিলেন; কিন্তু মানিনী গাড়ীর ভিতর হইতে কহিতে লাগিলেন, “জোরসে হাঁকাও।” কাজেই গাড়ী দ্রুতগতি চলিতে লাগিল। অনন্যোপায় হইয়া বিপিন ক্ষান্ত হইলেন; কিন্তু বহুদূর পর্য্যন্ত তিনি সেই গাড়ীর উপর লক্ষ্য করিয়া রহিলেন। গাড়ী ক্রমে অদৃশ্য হইয়া গেল। যে সময় বিপিন একদৃষ্টে গাড়ীর দিকে চাহিয়াছিলেন, সেই সময় সেই ভাড়াটিয়া গাড়ীর পশ্চাৎ সংবদ্ধ নম্বরের উপর তাঁহার দৃষ্টি পড়িয়াছিল। তিনি দেখিলেন, সেই গাড়ীর নম্বর ২৫৯।