পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8০
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

আস্তে আস্তে সেই বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিলেন। বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিয়া দেখিলেন, উহা বেশ্যালয়; উক্ত বাড়ীতে অনেকগুলি বেশ্যা বাস করিয়া থাকে। বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিবার সময় সম্মুখেই একটী স্ত্রীলোকের সহিত তাঁহাদিগের সাক্ষাৎ হইল। মানিনীর কথা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলে সে কহিল, “তিন তালায় গমন করুন, সেইস্থানে তাহাকে দেখিতে পাইবেন।”

 এই স্ত্রীলোকটীর কথা শ্রবণ করিয়া তাঁহারা উভয়েই একবারে তিন তলায় গমন করিলেন। সেই তিন তলায় কেবলমাত্র দুইখানি মাত্র ঘর ছিল। তাহার একখানিতে প্রবেশ করিয়া তাঁহারা দেখিলেন, মানিনী নূতন সাজসজ্জায় সজ্জিত হইয়া, ডাক্তার বাবু ও আরও কয়েকজন লোকের সহিত একত্র একশয্যায় উপবেশন করিয়া সুরাদেবীর আরাধনায় কায়মনোবাক্যে নিযুক্ত আছে! হাসি-তামাসার মধ্যে একটী একটী গীতও গাইতেছে।

 এই অবস্থা দেখিয়া বিপিন ও তাঁহার বন্ধুর মনের ভাব যে কিরূপ হইল, তাহা আর এই স্থানে বর্ণন করিবার প্রয়োজন নাই। পাঠকগণ আপনাপন মনেই তাহা স্থির করিয়া লইবেন।

 যে সময় তাঁহারা উভয়ে সেইস্থানে প্রবেশ করেন, সেই সময় মানিনী তাহা দেখিতে পাইল। দেখিবামাত্র মানিনী দ্রুতপদে তাঁহাদিগের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইল, এবং ভয়ানক চীৎকারস্বরে বলিতে লাগিল, “এই স্থানেও তোরা আমাকে জ্বালাতন করিতে আসিয়াছিস্? নির্জ্জনে আসিয়াও তোদের হাত হইতে আমার নিস্তার নাই। ভাল চাস ত, এখনই এখান হইতে বাহির হইয়া যা; নতুবা পদাঘাতে এইস্থান হইতে বাহির করিয়া দিব।”