পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানিনী।
৪৩

বাস করিতে লাগিলেন। বিপিন তাঁহার সঙ্গেই রহিলেন। তিনি মনে করিয়াছিলেন, এবার দেখিয়া শুনিয়া পুনরায় তিনি বিপিনের বিবাহ দিবেন, কিন্তু সে প্রস্তাবে বিপিন কিছুতেই সম্মত হইলেন না।

 এদিকে বেশ্যামহলে মানিনীর নাম জাঁকিয়া উঠিল। তৈজসপত্র, অলঙ্কার, বস্ত্র প্রভৃতি নিত্য নূতন দ্রব্য সকল তাহার ঘরে আসিয়া ঘরের শ্রী সম্পাদন করিতে থাকিল। একখানি বাড়ীও হইল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এইরূপে পাঁচ সাত বৎসর অতীত হইতে না হইতেই পুনরায় সকলে শুনিলেন যে, মানিনীর অবস্থা ক্রমে শোচনীয় হইয়া গিয়াছে। কোন কোন দুষ্ট ব্যক্তি মানিনীকে ফাঁকি দিয়া তাহার বাড়ী ঘর প্রভৃতি আত্মসাৎ করিয়াছে; অলঙ্কারপত্র চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছে, দেনার দায়ে তৈজসপত্র বিক্রয় হইয়া গিয়াছে!

 বিশ্বস্ত বন্ধু ডাক্তার বাবুর উপর ঈশ্বর যে অসন্তুষ্ট হইলেন, তাহা আর বলিতে হইবে না। যে সময় মানিনীর অবস্থার উন্নতি হইয়াছিল, সেই সময় ডাক্তার বাবু বিষম রোগে আক্রান্ত হন। তাহার শরীরের এক অঙ্গ পতিত হইয়া যায়। কয়েক বৎসরকাল সেই অবস্থায় শয্যাগত থাকিয়া সবিশেষ কষ্ট ও যন্ত্রণা অনুভব করিয়া পরিশেষে ইহজীবন পরিত্যাগ করেন।

 শিক্ষিতা স্ত্রীর ব্যবহার দেখিয়া বিপিনের মন একবারে ভঙ্গ হইয়া গেল। অনেক চেষ্টা করিয়াও কোনরূপে তিনি আপন মনকে অন্য পথে চালিত করিতে পারিলেন না। ক্রমে তাঁহার অঙ্গ সকল শিথিল হইয়া পড়িতে লাগিল, এবং পরিশেষে ইহধাম পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত্তে তিনি যাহা বলিলেন, তাহা শ্রবণ করিয়া শ্রোতামাত্রেরই চক্ষুতে জল