পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
মানুষের ধর্ম্ম

ধারা চলেচে ইতিহাসের মধ্য দিয়ে, এই বাণী বহন ক’রে, সোঽহম্‌, I and my Father are one.

 সোঽহম্‌ মন্ত্র মুখে আউড়িয়ে তুমি দুরাশা করো কর্ম্ম থেকে ছুটি নিতে। সমস্ত পৃথিবী রইল পড়ে, তুমি একা যাবে দায় এড়িয়ে। যে ভীরু চোখ বুজে মনে করে পালিয়েচি সে কি সত্যই পালিয়েচে। সোঽহম্‌ সমস্ত মানুষের সম্মিলিত অভিব্যক্তির মন্ত্র, কেবল এক জনের না। ব্যক্তিগত শক্তিতে নিজে কেউ যতটুকু মুক্ত হচ্চে সেই মুক্তি তার নিরর্থক, যতক্ষণ সে তা সকলকে না দিতে পারে। বুদ্ধদেব আপনার মুক্তিতেই সত্যই যদি মুক্ত হতেন তাহলে একজন মানুষের জন্যেও তিনি কিছুই করতেন না। দীর্ঘজীবন ধরে তাঁর তো কর্ম্মের অন্ত ছিল না। দৈহিক প্রাণ নিয়ে তিনি যদি আজ পর্য্যন্ত বেঁচে থাকতেন তাহলে আজ পর্য্যন্তই তাঁকে কাজ করতে হোত আমাদের সকলের চেয়ে বেশি। কেননা যাঁরা মহাত্মা তাঁরা বিশ্বকর্ম্মা।

 নীহারিকার মহাক্ষেত্রে যেখানে জ্যোতিষ্ক সৃষ্টি হচ্চে সেখানে মাঝে মাঝে এক একটি তারা দেখা যায়; তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় সমস্ত নীহারিকার বিরাট অন্তরে সৃষ্টি-হোমহুতাশনের উদ্দীপনা। তেমনি মানুষের ইতিহাসের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে মহাপুরুষদের দেখি। তাঁদের থেকে এই কথাই বুঝি যে সমস্ত মানুষের