পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
১১

ব্রহ্মের আনন্দ-ব্রহ্মের রাজ্য। এ রাজ্যে মানুষ যেকাজগুলো করে হিসাবী লোক জিজ্ঞাসা করতে পারে এ সব কেন? একমাত্র তার উত্তর, “আমার খুসি।” তার বিজ্ঞানে, তার সাহিত্যে, তার শিল্পকলায় এই এক উত্তর, আমার খুসি। মাথা-তোলা মানুষের এত বড়ো গর্ব্ব। জন্তুদেরও যথেচ্ছ খেলার অবকাশ আছে, কিন্তু জীবনে তাদের খেলাটা গৌণ। তা ছাড়া তাদের খেলাও প্রকৃতির অনুগত। বিড়ালছানার খেলা মিথ্যা ইঁদুর মিছামিছি ধরা, কুকুর ছানার খেলা নিজের ল্যাজের সঙ্গে লড়াই করার সগর্জ্জন ভান। কিন্তু মানুষের যে কাজটাকে লীলা বলা যায় অর্থাৎ যা তার কোনো দরকারের আমলে আসে না, কথায় কথায় সেইটেই হয়ে ওঠে মুখ্য, ছাড়িয়ে যায় তার প্রাণযাত্রাকে। সেইটের দ্বারাই তার শ্রেষ্ঠতার পরিচয়। অবকাশের ভূমিকায় মানুষ সর্ব্বত্রই আপন অমরাবতী রচনায় ব্যস্ত, সেখানে তার আকাশকুসুমের কুঞ্জবন। এই সব কাজে সে এত গৌরব বোধ করে যে চাষের ক্ষেতে তার অবজ্ঞা। আধুনিক বাংলা ভাষায় সে যাকে একটা কুশ্রাব্য নাম দিয়েচে কৃষ্টি, হাল লাঙলের সঙ্গে তার কোনো যোগ নেই এবং গোরুকে তার বাহন বললে ব্যঙ্গ করা হয়। বলা বাহুল্য দূরতম তারায় মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন, সেই তারার যে-আলোকরশ্মি চার পাঁচ হাজার এবং