পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
মানুষের ধর্ম্ম

স্বভাবের মধ্যে নিত্যই দ্বন্দ্ব। তাই ধর্ম্মের পথকে অর্থাৎ মানুষের পরম স্বভাবের পথকে দুর্গং পথস্তৎ করয়ো বদন্তি।

জন্তুর অবস্থাও যেমন স্বভাবও তার অনুগত। তার বরাদ্দও যা, কামনাও তার পিছনে চলে বিনা বিদ্রোহে। তার যা পাওনা, তার বেশি তার দাবী নেই। মানুষ বলে বসল আমি চাই উপ্‌রি-পাওনা। বাঁধা বরাদ্দের সীমা আছে, উপ্‌রি-পাওনার সীমা নেই। মানুষের জীবিকা চলে বাঁধা বরাদ্দে, উপ্‌রি-পাওনা দিয়ে প্রকাশ পায় তার মহিমা।

জীবধর্ম্মরক্ষার চেষ্টাতেও মানুষের নিরন্তর একটা দ্বন্দ্ব আছে। সে হচ্চে প্রাণের সঙ্গে অপ্রাণের দ্বন্দ্ব। অপ্রাণ আদিম, অপ্রাণ বিরাট। তার কাছ থেকে রসদ সংগ্রহ করতে হয় প্রাণকে, মালমস্‌লা নিয়ে গড়ে তুলতে হয় দেহযন্ত্র। সেই অপ্রাণ নিষ্ঠুর মহাজনের মতো, ধার দেয় কিন্তু কেবলি টানাটানি করে ফিরে নেবার জন্যে, প্রাণকে দেউলে করে দিয়ে মিলিয়ে দিতে চায় পঞ্চভূতে।

এই প্রাণচেষ্টাতে মানুষের শুধু কেবল অপ্রাণের সঙ্গে প্রাণের দ্বন্দ্ব নয়, পরিমিতের সঙ্গে অপরিমিতের। বাঁচবার দিকেও তার উপ্‌রি-পাওনার দাবী। বড়ো করে বাঁচতে হবে, তার অন্ন যেমন-তেমন নয়; তার বসন,