পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৩৭

বস্তুত গানের সেই থামাকে সীমা বলা যায় না। সে এমন একটি শেষ যার শেষ নেই। অতএব যথার্থ গায়কের আত্মা আপন সার্থতাকে প্রকাশ করে তানের প্রভূত সংখ্যার দ্বারা নয়, সমগ্র গানের সেই চরম রূপের দ্বারা যা অপরিমেয়, অনির্ব্বচনীয়, বাইরের দৃষ্টিতে যা স্বল্প, অন্তরে যা অসীম। তাই মানুষের যে-সংসার তার অহং-এর ক্ষেত্রে, সেদিকে তার অহঙ্কার ভূরিতায়, যেদিকে তার আত্মা সেদিকে তার সার্থকতা ভূমায়। একদিকে তার গর্ব্ব স্বার্থসিদ্ধিতে, আর একদিকে তার গৌরব পরিপূর্ণতায়। সৌন্দর্য্য, কল্যাণ, বীর্য্য, ত্যাগ প্রকাশ করে মানুষের আত্মাকে, অতিক্রম করে প্রাকৃত মানুষকে, উপলব্ধি করে জীবমানবের অন্তরতম বিশ্বমানবকে। যং লব্ধ্বা চাপরং লাভং মন্যতে নাধিকং ততঃ।

চারিদিকে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্চে অন্য সকল প্রাণী, বাইরে থেকে জীবিকার অর্থ খুঁজে খুঁজে। মানুষ আপন অন্তরের মধ্যে আশ্চর্য্য হয়ে কাকে অনুভব করলে যিনি নিহিতার্থো দধাতি, যিনি তাকে তার অন্তর্নিহিত অর্থ দিচ্চেন। সেই অর্থ মানুষের আপন আত্মারই গভীর অর্থ, সেই অর্থ এই যে মানুষ মহৎ, মানুষকে প্রমাণ করতে হবে যে, সে মহৎ, তবেই প্রমাণ হবে যে, সে মানুষ; প্রাণের মূল্য দিয়েও তার আপন ভূমাকে প্রকাশ