পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
মানুষের ধর্ম্ম

পরিপূর্ণতার বিষয়। আমাদের ধর্ম্মশ্চ কর্ম্ম চ, আমাদের ঋতং সত্যং, আমাদের ভূতং ভবিষ্যৎ সেই সত্তারই অপর্য্যাপ্তিতে।

মানবিক সত্তাকে সম্পূর্ণ ছাড়িয়ে যে নৈর্ব্যক্তিক জাগতিক সত্তা, তাঁকে প্রিয় বলা বা কোনো কিছুই বলার কোনো অর্থ নেই। তিনি ভালোমন্দ সুন্দর অসুন্দরের ভেদবর্জ্জিত। তাঁর সঙ্গে সম্বন্ধ নিয়ে পাপপুণ্যের কথা উঠতে পারে না। অস্তীতিব্রুবতোঽন্যত্র কথং তদুপলভ্যতে। তিনি আছেন এ ছাড়া তাঁকে কিছুই বলা চলে না। মানবমনের সমস্ত লক্ষণ সম্পূর্ণ লোপ ক'রে দিয়ে সেই নির্ব্বিশেষে মগ্ন হওয়া যায় এমন কথা শোনা গেছে। এ নিয়ে তর্ক চলে না। মন-সমেত সমস্ত সত্তার সীমানা কেউ একেবারেই ছাড়িয়ে গেছে কিনা আমাদের মন নিয়ে সে কথা নিশ্চিত বলব কী ক'রে। আমরা সত্তামাত্রকে যে-ভাবে যেখানেই স্বীকার করি সেটা মানুষের মনেরই স্বীকৃতি। এই কারণেই দোষারোপ ক'রে মানুষের মন স্বয়ং যদি তাকে অস্বীকার করে তবে শূন্যতাকেই সত্য বলা ছাড়া উপায় থাকে না। এমন নাস্তিবাদের কথাও মানুষ বলেচে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক তা বললে তার ব্যবসা বন্ধ করতে হয়। বৈজ্ঞানিক অভিজ্ঞতায় আমরা যে-জগৎকে জানি বা কোনো কালে জানবার সম্ভাবনা রাখি সেও মানবজগৎ। অর্থাৎ