পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৬১

সোনার, কোনোটার মাটির। শিখা আপনাকেই প্রকাশ করে, এবং তারি প্রকাশে আর সমস্তও প্রকাশিত। প্রদীপের সীমাকে উত্তীর্ণ হয়ে সে প্রবেশ করে নিখিলের মধ্যে।

 মানুষের আলো জ্বালায় তার আত্মা, তখন ছোটো হয়ে যায় তার সঞ্চয়ের অহঙ্কার। জ্ঞানে প্রেমে ভাবে বিশ্বের মধ্যে ব্যাপ্তি-দ্বারাই সার্থক হয় সেই আত্মা। সেই যোগের বাধাতেই তার অপকর্ষ। জ্ঞানের যোগে বিকার ঘটায় মোহ, ভাবের যোগে অহঙ্কার, কর্ম্মের যোগে লোভ স্বার্থপরতা। ভৌতিক বিশ্বে সত্য আপন সর্ব্বব্যাপক ঐক্য প্রমাণ করে, সেই ঐক্য-উপলব্ধিতে আনন্দিত হয় বৈজ্ঞানিক। তেমনি আত্মার আনন্দ আত্মিক ঐক্যকে উপলব্ধি-দ্বারা, যে-আত্মার সম্বন্ধে উপনিষদ বলেচেন, তমেবৈকং জানথ আত্মানম্‌—সেই আত্মাকে জানো সেই এককে, যাকে সকল আত্মার মধ্যে এক ক’রে জানলে সত্যকে জানা হয়। প্রার্থনামন্ত্রে আছে, য একঃ যিনি এক, স নো বুদ্ধ্যা শুভয়া সংযুনক্তু—শুভবুদ্ধির দ্বারা তিনি আমাদের সকলকে এক ক’রে দিন। যে-বুদ্ধিতে আমরা সকলে মিলি সেই বুদ্ধিই শুভবুদ্ধি, সেই বুদ্ধিই আত্মার। যথৈবাত্মা পরস্তদ্বদ্‌ দ্রষ্টব্যঃ শুভমিচ্ছতা,—আপনার মতো ক’রে পরকে দেখার ইচ্ছাকেই বলে