পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৬৩

আনন্দের যোগ, পরস্পরের উদ্দেশে ত্যাগ। এইখানে আত্মার লক্ষণকে স্বীকার করার দ্বারাই তার শ্রেষ্ঠতার উপলব্ধি। উভয়ের মধ্যে পাশাপাশি কীরকম বিপরীত অসঙ্গতি দেখা যায় একটা তার দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক।

 কয়েক বৎসর পূর্ব্বে লণ্ডনের টাইম্‌স পত্রে একটি সংবাদ বেরিয়েছিল, আমেরিকার নেশন পত্র থেকে তার বিবরণ পেয়েচি। বায়ুপোতে চ’ড়ে ব্রিটিশ বায়ুনাবিকসৈন্য আফগানিস্থানে মাহ্‌সুদ্‌ গ্রাম ধ্বংস করতে লেগেছিল। শতঘ্নীবর্ষিণী একটা বায়ুতরী বিকল হয়ে গ্রামের মাঝখানে গেল পড়ে। একজন আফগান মেয়ে নাবিকদের নিয়ে গেল নিকটবর্ত্তী গুহার মধ্যে, একজন মালিক তাদের রক্ষার জন্যে গুহার দ্বার আগলিয়ে রইল। চল্লিশজন ছুরি আস্ফালন ক’রে তাদের আক্রমণ করতে উদ্যত, মালিক তাদের ঠেকিয়ে রাখলে। তখনো উপর থেকে বোমা পড়চে, ভিড়ের লোক ঠেলাঠেলি করচে গুহায় আশ্রয় নেবার জন্যে। নিকটবর্ত্তী স্থানের অন্য কয়েকজন মালিক এবং একজন মোল্লা এদের আনুকূল্যে প্রবৃত্ত হোলো। মেয়েরা কেউ কেউ নিলে এদের আহারের ভার। অবশেষে কিছু দিন পরে মাহ্‌সুদের ছদ্মবেশ পরিয়ে এরা তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছিয়ে দিল।

 এই ঘটনার মধ্যে মানবস্বভাবের দুই বিপরীত দিক