পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
মানুষের ধর্ম্ম


যস্যাত্মা বিরতঃ পাপাৎ কল্যাণে চ নিবেশিতঃ
তেন সর্ব্বমিদং বুদ্ধং প্রকৃতির্বিকৃতিশ্চ যা।

 আত্মা যাঁর পাপ থেকে বিরত ও কল্যাণে নিবিষ্ট, তিনি সমস্তকে বুঝেচেন। তাই তিনি জানেন কোন্‌টা স্বভাবসিদ্ধ কোন্‌টা স্বভাববিরুদ্ধ।

 মানুষ আপনার স্বভাবকে তখনি জানে যখন পাপ থেকে নিবৃত্ত হয়ে কল্যাণের অর্থাৎ সর্ব্বজনের হিতসাধনা করে। অর্থাৎ মানুষের স্বভাবকে জানে মানুষের মধ্যে যারা মহাপুরুষ। জানে কী ক’রে। তেন সর্ব্বমিদং বুদ্ধম্‌। স্বচ্ছমন নিয়ে সমস্তটাকে সে বোঝে। সত্য আছে শিব আছে সমগ্রের মধ্যে। যে পাপ অহংসীমাবদ্ধ স্বভাবের, তার থেকে বিরত হোলে তবে মানুষ আপনার আত্মিক সমগ্রকে জানে, তখনি জানে আপনার প্রকৃতি। তার এই প্রকৃতি কেবল আপনাকে নিয়ে নয়, তাঁকেই নিয়ে যাঁকে গীতা বলচেন তিনিই পৌরুষং নৃষু, মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব। মানুষ এই পৌরুষের প্রতিই লক্ষ্য ক’রে বলতে পারে ধর্ম্মযুদ্ধে মৃতো বাপি তেন লোকত্রয়ং জিতম্‌। মৃত্যুতে সেই পৌরুষকে সে প্রমাণ করে যা তার দেবত্বের লক্ষণ, যা মৃত্যুর অতীত।