পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৬৭

 শ্রেয় প্রেয় নিয়ে এতক্ষণ যা বলা হোলো সেটা সমাজস্থিতির দিক দিয়ে নয়। নিন্দা প্রশংসার ভিত্তিতে পাকা ক’রে গেঁথে শাসনের দ্বারা উপদেশের দ্বারা আত্মরক্ষার উদ্দেশে সমাজ যে-ব্যবস্থা ক’রে থাকে তাতে চিরন্তন শ্রেয়োধর্ম্ম গৌণ, প্রথাঘটিত সমাজরক্ষাই মুখ্য। তাই এমন কথা শোনা যায় শ্রেয়োধর্ম্মকে বিশুদ্ধভাবে সমাজে প্রবর্ত্তন করা ক্ষতিকর। প্রায়ই বলা হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভূরিপরিমাণ মূঢ়তা আছে এই জন্যে অনিষ্ট থেকে ঠেকিয়ে রাখতে হোলে মোহের দ্বারাও তাদের মন ভোলানো চাই, মিথ্যা উপায়েও তাদের ভয় দেখানো বা সান্ত্বনা দেওয়া দরকার, তাদের সঙ্গে এমন ভাবে ব্যবহার করা দরকার, যেন তারা চিরশিশু বা চিরপশু। ধর্ম্মসম্প্রদায়েও যেমন সমাজেও তেমনি, কোনো এক পূর্ব্বতনকালে যে সমস্ত মত ও প্রথা প্রচলিত ছিল সেগুলি পরবর্ত্তীকালেও আপন অধিকার ছাড়তে চায় না। পতঙ্গমহলে দেখা যায় কোনো কোনো নিরীহ পতঙ্গ ভীষণ পতঙ্গের ছদ্মবেশে নিজেকে বাঁচায়। সমাজরীতিও তেমনি। তা নিত্যধর্ম্মের ছদ্মবেশে আপনাকে প্রবল ও স্থায়ী করতে চেষ্টা করে। এক দিকে তার পবিত্রতার বাহ্যাড়ম্বর, অন্য দিকে পারত্রিক দুর্গতির বিভীষিকা, সেই সঙ্গে সম্মিলিত শাসনের নানাবিধ কঠোর, এমন