পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
মানুষের ধর্ম্ম

কিন্তু এই সত্যকে আপন করাই মানুষের সাধনা। মানুষের ইতিহাসে চিরকাল এই সাধনাই নানা রূপে নানা নামে নানা সঙ্কল্পের মধ্য দিয়ে চলেচে। যিনি পরম আমি, যিনি সকলের আমি সেই আমিকেই আমার ব’লে সকলের মধ্যে জানা যে পরিমাণে আমাদের জীবনে আমাদের সমাজে উপলব্ধ হচ্চে সেই পরিমাণেই আমরা সত্য মানুষ হয়ে উঠচি। মানুষের রিপু মাঝখানে এসে এই সোঽহম্‌ উপলব্ধিকে দুইভাগ করে দেয়, একান্ত হয়ে ওঠে অহম্‌

 তাই উপনিষদ বলেন,

মা গৃধঃ

—লোভ কোরো না। লোভ বিশ্বের মানুষকে ভুলিয়ে বৈষয়িক মানুষ করে দেয়। যে-ভোগ মানুষের যোগ্য তা সকলকে নিয়ে, তা বিশ্বভৌমিক, তা মানুষের সাহিত্যে আছে, শিল্পকলায় আছে, তাই প্রকাশ পায় মানুষের সংসারযাত্রায়, তার হৃদয়ের আতিথ্যে। তাই আমাদের শাস্ত্রে বলে

অতিথিদেবো ভব।

কেননা আমার ভোগ সকলের ভোগ এই কথাটা অতিথিকে দিয়ে গৃহস্থ স্বীকার করে, তার ঐশ্বর্য্যের সঙ্কোচ দূর হয়। ব্যক্তিগত মানবের ঘরে সর্ব্বমানবের প্রতিনিধি হয়ে আসে অতিথি, তার গৃহসীমাকে