পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/১৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫
মায়াবাঁশী

আজই যাক।” ব’লে রাখাল রক্ষীর সঙ্গে আস্তাবলের দিকে চলল। আস্তাবলের দরজা খুলতেই তিড়িং করে এক খরগোষ লাফ দিয়ে রাখালকে ডিঙ্গিয়ে দিল ছুট। সঙ্গে সঙ্গে আরো গোটা দশ পনের, কোন্ দিক দিয়ে যে ছুটে গেল, তা রাখাল দেখতেই পেল না। একশো খরগোষ গুণবে কি, পঁচিশটা গুণতেই আস্তাবল খালি হয়ে গেল। ব্যাপার দেখে রাখালের মাথায় একেবারে বজ্রাঘাত হ’ল। কি করে, ফেরবার তো উপায় নেই।

 এদিকে রাখালের অবস্থা দেখে সভাসদের সব হেসে লুটোপুটি। কেউ কেউ দুঃখ করে বললে, “গরীবের ছেলে রাজত্বের লোভে প’ড়ে শেষে প্রাণটা খোয়াল দেখছি।” রাখাল যেদিকে খরগোষ গেছে ভাবতে ভাবতে সেই দিকে চললো। গিয়ে দেখে, দু-চারটে খরগোষ মাত্র এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাকীগুলোর চিহ্নও নেই। তখন ভাবতে ভাবতে রাখালের মনে পড়ে গেল বুড়ীর দেওয়া বাঁশীর কথা। তখন জামার ভিতর থেকে বাঁশীটা বের ক’রে জোরে ফুঁ দিতেই যেখানে যত খরগোষ ছিল সব লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে রাখালের চারপাশে এসে জুটল। রাখালের মুখ হাসিতে ভরে উঠল। এইবার! আর চাই কি! রাজকন্যা আর রাজত্ব। আর ঠকাবার যো নেই।