পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/২৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মায়াবাঁশী
১৮

উদ্দেশ্য ছিল, তত্ত্বজ্ঞান লাভ করা। কিছুদিন ভ্রমণের পর সে দেখলে যে, তত্ত্বজ্ঞানের পরিবর্ত্তে সে দারুণ বাতব্যাধি লাভ ক’রেছে। তখন জডিগ দিন কয়েকের জন্য বিশ্রাম করবার মৎলব ক’রে এক গ্রামের দিকে চলল। গ্রামে ঢুকতেই সে দেখে যে এক সাধু একটি খেজুর গাছের নীচে ব’সে প্রকাণ্ড একখানা পুঁথি খুলে বসে খেজুর খাচ্ছেন। একরাশ সাদা লম্বা চুল তাঁর ঘাড়ের উপর এসে পড়েছে। মাথার চুল থেকে পরণের পায়জামাটি পর্য্যন্ত তাঁর ধবধবে সাদা। দেখে জডিগের মনে বড় ভক্তি হ’ল। সে সাধুর কাছে গিয়ে নমস্কার করে বললে, “প্রভু, প্রকাণ্ড কেতাব খানা কি?” “এটা হচ্ছে, অদৃষ্টের পুঁথি। তুমি তো বাপু তত্ত্বজ্ঞান লাভ করবার জন্য ঘুরে মরছ; দেখ দেখি বুঝতে পার কি না।” বলে সাধু বইখানা জডিগের হাতে তুলে দিলেন। খাতা খুলেই জডিগের চক্ষু স্থির! পৃথিবীর অনেকগুলি ভাষা সে জানত, কিন্তু এ রকম অদ্ভুত অক্ষর কোনো দিন তার চোখে এ পর্য্যন্ত পড়েনি।

 “কিছুই তো বুঝতে পারলাম না, প্রভু,” ব’লে জডিগ বইটা সাধুর হাতে দিল।

 “বুঝবে হে বাপু, বুঝবে। দিনকতক থাক আমার সঙ্গে, সব তোমাকে বুঝিয়ে দেব।”