পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 সবাই ঊর্ধ্বে নিশানের দিকে চেয়ে পথ চলেছে, সবাই চিৎকার করছে, কিছু-না-কিছু বলছে, কিন্তু সমস্ত কণ্ঠ ডুবিয়ে বেজে উঠছে সেই গান···নতুন গান···এ সে পুরাণো দুঃখ-করুণ সুর নয়, এ সে অভাবক্লিষ্ট ভয়াতুর ব্যক্তিত্বহীন নিরানন্দ নিঃসঙ্গ নিশি-যাত্রীর আর্ত-বিলাপ নয়, এ সে রুদ্ধ-শক্তির অভিব্যক্তি বেদনা নয়।···ভালোমন্দ দুই-ই, অবিভেদে নাশ করে যে—এ সে ক্রুদ্ধ সাহসের উত্তেজিত সুর নয়! এ সে পশুশক্তি নয়, যা শুধু মুক্তির জন্যই মুক্তি চাই ব’লে চিৎকার করে, যা অন্যায়ের প্রতিহিংসাবশে শুধু ধ্বংসই করে চলে, সৃষ্টি করতে পারে না। দাসত্ব-দুষিত, পুরাণো জগতের কোন-কিছু নেই এতে। সোজা··· সরল···সুদৃঢ়···শান্ত এ সংগীত। মানুষকে এ মাতিয়ে নিয়ে চলে দীর্ঘ অন্তহীন পথে, সুদুর সমুজ্জ্বল ভবিষ্যতের অভিমুখে। পথের দুঃখ এ গোপন করে না। এর স্থির অচঞ্চল আগুনে জ্বলে পুড়ে গলে যায় মানুষের স্তূপীকৃত দুঃখ-বেদনা, তার চিরাভ্যস্ত মলিন সংস্কার-ভার, নব-যুগের সম্বন্ধে তার মিথ্যা আশঙ্কা।

 সেই বিশাল জন-সমুদ্র এই সংগীতে উদ্বুদ্ধ হ’য়ে এগিয়ে চললো। পেছনে সংশয়ী বিজ্ঞদল। এ অভিনয়ের কখন কোথায় অবসান হ’বে, তা যেন তারা আগে থেকেই জানে। মা শুনলেন তাদের কথা।

 একদল সৈন্য স্কুলের কাছে, আর একদল কারখানার কাছে।

 গভর্ণর এসে পড়েছে।

 তাই নাকি?

 হাঁ, আমি স্বচক্ষে দেখলুম তাঁকে৷

 একজন তা’ শুনে সোল্লাসে চিৎকার করে উঠলো, আমাদের ওরা কম

১১৬