পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা
মা

 পান-পাত্র টেবিলের ওপর রেখে মা নীরবে প্রার্থনা করতে লাগলেন।

 বাইরে মজুরদের মাতলামি-ভরা সঙ্গীত, গালাগালি এবং চীৎকার।


 আবার দিন ব’য়ে চললাে তেমনি একটানা সুরের মতাে···শুধু এ বাড়ি থেকে আগের সে মাতলামি, সে অশান্তি লোপ পেতে লাগলাে। পল্লির অন্যান্য বাড়ি থেকে একটু স্বতন্ত্র হ’য়ে উঠলো।

 বাড়িখানি পল্লির এক-প্রান্তে, একটু ঢালু জায়গায়। তিনটি কামরা,···একটি রান্নাঘর···একটি ছােট কুঠরি···মায়ের শােবার ঘর, রান্নাঘর থেকে একটি ছাদ পর্যন্ত উঁচু পার্টিশনে ভিন্ন করা···ঘরের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে এই দু’টো কামরা। বাকিটা একটা চৌকো কামরা, তাতে দু’খানা জানালা, কোনায় পেভেলের বিছানা, তার সামনে একটা টেবিল, দু’খানা বেঞ্চি, কয়েকখানা চেয়ার, একটা ছােট আরশিওয়ালা হাত-ধোয়ার পাত্র, একটা ট্রাঙ্ক, একটা ঘড়ি এবং দু’টো আইকন।

 অন্যান্য সবাই যেমন দিন কাটায়, পেভেলও চেষ্টা করেছিলাে তেমনি ভাবে দিন কাটাতে। একজন যুবক যা’ করে থাকে, সব-কিছু সে করলাে···একটা বেহালা কিনলাে, সার্ট, রঙীন নেকটাই, জুতো, ছড়ি—কোন কিছুই আর তার বাদ রইলাে না। বাহ্যত সে সমবয়সী অন্যান্য ছেলেদেরই মতাে···সান্ধ্যভােজে যায়···নাচে···মদ খায়, তারপর মাথার যন্ত্রণায় ছট্‌ফট্ করতে থাকে, বুক জ্বলে, মুখ-চোখ মলিন হয়···আবার মা প্রশ্ন করেন, কালকের দিন ভালাে কাটলো, বাবা?

 ক্ষুব্ধ বিরক্ত হ’য়ে সে বলে ও’ঠে, ও গােরস্থানের মতাে নীরস···সবাই যেন এক-একটা মেশিন···তার চেয়ে মাছ ধরতে কি শিকার করতে যাবাে।

১৭