পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

এই মন্দভাগ্যজীবন দেখে মানুষ কতবড় একটা শিক্ষা পেতে পারে। কতলোক মরণের কোলে হেলে পড়েছে শ্রমের নিপীড়নে; কত লোক পঙ্গু বিকলাঙ্গ হ’য়ে ক্ষুধায় ধুকতে ধুকতে নীরবে প্রাণ দিচ্ছে। বজ্রকণ্ঠে আজ সেই কথা প্রচার করা দরকার, ভাইসব, বজ্রকণ্ঠে সেই কথা প্রচার করা দরকার।

 উত্তেজনায় সেভ্‌লি কাঁপতে লাগলো।

 ইয়াফিম বললো, তা কেন? মানুষ আমি, সুখ যতটুকু পাই, তার কথাই জানুক, দুঃখ আমার মনে মনেই থাক, কারণ সে আমার একান্ত নিজস্ব জিনিস।

 রাইবিন বললো, কিন্তু সেভ্‌লির দুঃখ শুধু ওর ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, ইয়াফিম্,·· লক্ষ লক্ষ মানুষ আমরা যে দুঃখ ভুগছি, ও তারই একটা জ্বলন্ত উদাহরণ। ওর মাঝে আমরা নিজেদের ভাগ্যই প্রতিফলিত দেখতে পাই। ও একদম তলা পর্যন্ত নেবেছে···ভুগেছে···তার পর দুনিয়ার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলছে, হুসিয়ার, এদিক পানে পা বাড়িয়ো না।

 ইয়াকব সেভ্‌লিকে ধরে নিয়ে গিয়ে টেবিলের কাছে বসালো। বসে সেভ্‌লি আবার বলতে আরম্ভ করলো, কাজের চাপে মানুষকে পিষে মারে ওরা। ধ্বংস করে মানুষের প্রাণ! কেন? কিসের জন্য? আজ জবাব চাই তার। আমার মুনিব···তার কাপড়ের কলে আমার জীবন দিলুম আমি···আর তিনি? তিনি করলেন কি?—এক প্রণয়িনীকে সোনার হাত-ধোয়ার পাত্র উপহার দিলেন।···শুধু তাই নয়, প্রণয়িনীর প্রত্যেকটি প্রসাধন-দ্রব্য হ’ল সোনার। সেই পাত্রের মধ্যে আমার বুকের রক্ত, সেই পাত্রের মধ্যে আমার সমগ্র জীবন। ওরই জন্য জীবন গেছে আমার! একটা লোক আমাকে খাটিয়ে খুন করলো! কেন? না,

১৪৫