পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

—আমার রক্ত ছাড়া তার প্রণয়িনীর সুখ-সুবিধা হয় না, তার প্রণয়িনীর জন্য সোনার পাত্র কেনা হয় না।

 ইয়াফিম মৃদু হেসে বললো, ঈশ্বরের মূর্তি ধরে নাকি মানুষ তৈরি হয়েছে—সেই ঈশ্বরের মূর্তির এই অবস্থা! চমৎকার বলতে হ’বে।

 রাইবিন টেবিল চাপড়ে বললো, আর আমরা চুপ ক’রে থাকবো না।

 ইয়াকব যোগ করলো, সহ্য করবো না।

 মা শোফির দিকে ঝুঁকে পড়ে আস্তে আস্তে শোফিকে জিগ্যেস করলেন, যা’ বলছে তা সত্যি?

 হাঁ। খবরের কাগজে এরকম উপহারের কথা বেরোয়। আর ও যেটা বললো, ও ব্যাপারটা মস্কোর।

 রাইবিন প্রশ্ন করলো, কিন্তু সেই মুনিবের—ফাঁসি হ’ল না তার? কিন্তু হওয়া উচিত ছিল। তাকে ঘর থেকে টেনে বের ক’রে জনসাধারণের সামনে হাজির ক’রে, টুকরো টুকরো ক’রে ছিঁড়ে তার অপবিত্র নোঙরা মাংস-পিণ্ড কুকুরের মুখে ফেলে দেওয়া উচিত ছিল। একবার মানুষ জাগুক, তখন তারা এক বিরাট বধ্যমঞ্চ প্রস্তুত করবে, আর সেখানে ওদের অজস্র রক্তধারায় ধৌত করবে এতদিনের অন্যায়। ওদের রক্ত ওদের নয়···ও আমাদের···আমাদের রক্ত আমাদের শিরা থেকে শোষণ ক’রে নিয়েছে ওরা।···

 সেভ্‌লি ব’লে উঠলো, শীত করছে।

 ইয়াকব তাকে ধরে আগুনের কাছে বসিয়ে দিলো। রাইবিন সেভলিকে দেখিয়ে অনুচ্চস্বরে শোফিকে বলতে লাগলো, বইয়ের চেয়ে ঢের বেশি মর্মস্পর্শী এই জীবন-গ্রন্থ। মজুরের হাত যখন কাটা পড়ে—দোষ মজুরের নিজের। কিন্তু এমনিভাবে একটা লোকের রক্তমোক্ষণ ক’রে

১৪৬