পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

অত্যাচার অন্যান্য সবাইর মতো তোমারও অপেক্ষা করছে।···মা তুমি কারাগারকে ভয় কর?

 না।

 কর না? কিন্তু কারাগার সত্যিই নরক। এই কারাগারই আমায় মরণ-আঘাত দিয়েছে, মা।···সত্যি কথা বলতে কি, আমি মরতে চাইনে, মা—আমি মরতে চাইনে।

 মা সান্ত্বনা দিতে গেলেন, এখনই মরার কি হয়েছে; কিন্তু ইয়েগরের মুখের দিকে চেয়ে কথাগুলো যেন জমে গেলো মুখে।

 ইয়েগর বলতে লাগলো, অসুখ না হলে আজও কাজ করতে পারতুম। কাজ যার নেই···জীবন তার লক্ষ্যহীন···বিড়ম্বনা।

 ধীরে ধীরে সন্ধ্যার আঁধার ছেয়ে এলো। মা কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পরে দুয়োর বন্ধ করার মৃদু শব্দে জেগে উঠে বললেন কোমলকণ্ঠে, ঐ যা, ঘুমিয়ে পড়েছিলুম। মাপ করো।

 ইয়েগরও তেমনি কোমল কণ্ঠে জবাব দিলো, তুমিও মাপ কোরো।

 হঠাৎ তীব্র আলো ফুটে উঠলো ঘরে—লিউদ্‌মিলা এসে দাঁড়িয়েছে ঘরে, বলছে, ব্যাপার কি?

 মার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে জবাব দিলো ইয়েগর, চুপ।

 মুখ হা করে খুলে মাথা উঁচু করলো সে। মা তার মাথাটা ধরে মুখের দিকে চাইলেন। সে মাথাটা সজোরে ছিটকে নিয়ে বলে উঠলো, বাতাস···বাতাস। তার শরীর থর থর করে কেঁপে উঠলো, মাথাটা ভেঙে পড়লো কাঁধের ওপর। উন্মুক্ত চোখের মধ্যে প্রতিফলিত হল দীপের শুভ্র শিখা। মা চেঁচিয়ে উঠলেন, ইয়েগর, বাপ আমার!

১৫৫