পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

এলো সাহেবের দিকে। সাহেব ব্যাপার দেখেই তরবারি হাতে নিয়ে বলে উঠল, বটে, দাঙ্গা করছো, তোমরা দাঙ্গা করছো?···তারপর এদিকওদিক চেয়ে অবস্থার গতিক দেখে বলে, বেশ, নিয়ে যাও, ছেড়ে দিচ্ছি; কিন্তু জেনে রেখো, এ একজন রাজনৈতিক আসামী···জারের বিরুদ্ধে··· একে তোমরা আশ্রয় দিচ্ছো···তোমরাও তাহলে বিদ্রোহী···

 জনতা এ কথায় ভয়ানক দমে গেলো। তাদের সে উত্তেজনা দূর হ’য়ে সুরে ফুটে উঠলো যেন মিনতির ভাব। বলতে লাগলো, দোষ করেছে···আদালতে নিয়ে যাও··· মেরোনা···মাপ কর ওকে···এসব অত্যাচারের অর্থ কি? দেশে কি এখন বে-আইনের রাজত্ব?···এমনি ক’রে সবাইকে ঠ্যাঙাতে শুরু করলেই হয়েছে আর কি···শয়তানের দল, খালি মারধর শিখেছে।

 জন-কয়েক চাষী রাইবিনকে মাটি থেকে তুললো। পুলিসরা আবার তার হাত বাঁধতে গেলো।

 জনতা বাধা দিয়ে বললো, একটু সবুরই কর না!

 রাইবিন হাত দিয়ে রক্ত মুছে দাঁড়াতেই দেখলো, মা···ভিড়ের মধ্যে। মার সঙ্গে ইঙ্গিত-বিনিময় ক’রে পাশে দাঁড়ানো সেই নীল-চোখ চাষীর সঙ্গে বাক্যালাপ করে রাইবিন। তারপর জনতাকে সম্বোধন করে বলে উঠলো, সাহস এবং আশা-ভরা কণ্ঠে: বন্ধুগণ, কোন ভয় নেই। আমি দুনিয়ায় একা নই। সকল সত্যকে ওরা গ্রেপ্তার করতে পারবে না···আমি যাবো, কিন্তু আমার স্মৃতি থাকবে···একটি নীড় ওরা নষ্ট ক’রে দেয় দিক ···আরো বহু নীড়, বহু বন্ধু, বহু সঙ্গী আছে আমার···তারা সত্যের নব নব নীড় রচনা করবে।···তারপর একদিন বেরোবে তারা মুক্তির অভিযানে। মানুষকে করবে মুক্তি-প্রভায় সমুজ্জ্বল।

১৭০