পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

হন···মানুষের দুশমন যারা তাদের হাতে। আবেগের সঙ্গে বলে, এমন সব লােক আমি দেখেছি, মা···এঁরা দুনিয়ার সেরা লােক।

 মা আবার বলতে যান, তাই নাকি, পাশা? কিন্তু বলা হয় না। তাঁর ছেলেকে এমন সব বিপজ্জনক কথা বলতে শিখিয়েছে যাঁরা, তাঁদের গল্প শুনে শঙ্কিত হতে থাকেন। ছেলে মার হাত ধ’রে প্রগাঢ় স্বরে ডাকে, ‘মা!’ মা বিচলিত হন। বলেন, আমি কিছু করবনা বাছা,···শুধু তুই সাবধানে থাকিস···সাবধানে থাকিস্।

 কিন্তু কি হ’তে সাবধানে থাকবে, তা খুঁজে না পেয়ে ব’লে ফেলেন, তুই বড় রােগা হ’য়ে যাচ্ছিল। তারপর তার স্নেহ-ভরা দৃষ্টি দিয়ে পুত্রের সুগঠিত দেহখানি যেন আলিঙ্গন ক’রে বলেন, তুই যেমন খুশি চল্, আমি বাধা দেবো না, বাবা। শুধু একটা কথা মনে রাখিস আমার, অসতর্ক হ’য়ে কথা বলিস না···লােকদের নজরে নজরে রাখিস···ওরা সবাই পরস্পরকে ঘৃণা করে···অন্যের অনিষ্ট করে খুশি হয়...নিছক আমােদের লােভে মানুষকে পীড়া দেয়···যেই তাদের দোষ দিতে যাবি, বিচার করবি, অম্‌নি তারা তােকে ঘৃণা করবে,···তাের সর্বনাশ করবে।···

 দুয়ারের গােড়ায় দাঁড়িয়ে পেভেল মায়ের এই বেদনাময় অভিজ্ঞতার উপদেশ শুনলাে; তারপর মার কথা শেষ হ’লে বললাে, জানি, মা, কী শোচনীয় এই মানুষের দল! কিন্তু যেদিন উপলব্ধি করলুম, পৃথিবীতে একটা সত্য আছে, মানুষ আমার চোখে নতুনতর, সুন্দরতর শ্রীতে দেখা দিলাে। শৈশবে আমি মানুষকে শিখেছিলুম ভয় করতে, একটু বড় হ’য়ে করেছি ঘৃণা···আজ নতুন চোখে দেখছি সবাইকে···সবার জন্যই আজ আমি দুঃখিত। কেন জানিনা, আমার হৃদয় কোমল হ’য়ে এলো যখন

২২