পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

ক’রে একশক্তিতে উঠে দাঁড়াও। সমস্ত বাধা পরাভূত হবে। তোমরা ছাড়া তোমাদের আর বন্ধু কেউ নেই—এই কথাই মজুরদের বন্ধুরা তাদের বলতে চেয়েছে এবং বলতে গিয়ে কারাগারে, নির্বাসনে পলে পলে প্রাণ দিয়েছে। অসৎ লোকেরা কি এম্‌নিভাবে কথা বলে? প্রতারকরা কি এমনিভাবে প্রাণ দেয়?

 পুলিসরা ‘ভাগো’ ‘ভাগো’ বলে উপর্যুপরি ঠেলতে লাগলো লোকগুলোকে। মার প্রাণ যেন কথার ভারে, আবেগে উচ্ছ্বাসে ঝংকৃত হ’তে লাগলো গানের মতো? কম্পিত ভগ্নকণ্ঠে তিনি বলতে লাগলেন, আমার ছেলের এই বাণী এক ন্যায়নিষ্ঠ শ্রমিকের বাণী···আত্মবিক্রয় যে করেনি তার বাণী। এর সত্যতা তোমরা বুঝতে পারবে এর স্পষ্ট তেজোদৃপ্ত ভাষা হ’তে, নির্ভীক এ ভাষা। হে আমার মজুর বন্ধুগণ, এই নির্ভীক, নিত্য জ্ঞানদীপ্ত বাণী আজ তোমাদের কাছে উপস্থিত। প্রাণ খুলে একে গ্রহণ কর···এ দিয়ে প্রাণকে পুষ্ট কর। তোমাদের শক্তিলাভ হবে, সব আপদ হ’তে আত্মরক্ষা করার, সত্যের পরিপন্থী যুক্তির প্রতিকূল সবকিছুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার। এ বাণী গ্রহণ কর, বিশ্বাস কর,—একে পাথেয় করে বিশ্বমানবের সুখের পথে যাত্রা কর, পরম আনন্দভরে এক নবজীবনের অভিমুখে অগ্রসর হও!···

 মায়ের বুকে এক প্রচণ্ড ঘুষি এসে পড়লো। মা ট’লে বেঞ্চির ওপর পড়ে গেলেন। জনতার ওপরও অবিশ্রাম প্রহার চলতে লাগলো।

 মা একটু পরেই শেষ শক্তি প্রয়োগ করে চেঁচিয়ে উঠলেন, ভাইসব, তোমাদের বিচ্ছিন্ন শক্তি একত্র ক’রে এক মহাশক্তির সৃষ্টি কর···

২০২