পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

বাতাসে দাপাদাপি করছে, পা ব’সে যাচ্ছে, মুখে-চোখে কে যেন মুঠো মুঠো তুষার ছুড়ে মারছে—ন্যাটাশা এগোতে পারছে না, ঝড়ের মুখে একগাছি-কুশের মতো সে সুরে সুরে পথ বেয়ে চলেছে। ডানে তার কৃষ্ণাভ অরণ্য-প্রাচীর, নগ্নপত্রহীন গাছগুলি যেন বাতাসে ব্যথিত হয়ে আর্তনাদে চারিদিক পূর্ণ করে তুলেছে। দূরে শহরের ক্ষীণাতিক্ষীণ আলো।

 কী এক অভূতপূর্ব আতঙ্কে শিউরে উঠে’ মা উর্ধ্বে চেয়ে প্রার্থনা জানান, ভগবান, রক্ষা করো।



—চার—

 এমনি ক’রে দিন কাটে। ফি শনিবারে দলের লোকেরা পেভেলের বাড়িতে এসে মজলিস করে···আর এক-এক ধাপ ওপরে ওঠে···কিন্তু কোথায়, কতদূরে গিয়ে এ সিঁড়ি শেষ হয়েছে, কেউ তা জানে না। রোজ নয়া-নয়া লোক আসে, পেভেলের কামরায় আর তিলধারণের স্থান থাকেনা! ন্যাটাশাও আসে···তেমনি শ্রান্ত, ক্লান্ত কিন্তু যৌবনমদে তেম্‌নি জীবন্ত, পরিপূর্ণ। মা তার জন্য মোজা বোনেন, নিজের হাতে তার পায়ে পরিয়ে দিয়ে মাতৃস্নেহে তাকে অভিষিক্ত করেন। ন্যাটাশা প্রথমটা হাসে, তারপর হঠাৎ গম্ভীর হ’য়ে কি ভাবে। স্নিগ্ধ ধীর কণ্ঠে মাকে বলে, আমার এক ধাই···সেও আমায় এম্‌নি ভালবাসতো।···কী আশ্চর্য মা, কুলি-মজুরের এত দুঃখ-সংকুল অত্যাচারিত জীবন···

৩০